
৫ম অধিবেশন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
কেমন আছ দরবারের সাথীরা ? আজ এত নিরব কেন ? অনেকেই কিছু যেন একটা বলতে চাচ্ছে। ও প্রশ্ন ? হ্যাঁ আজকের দরবার প্রশ্নের জন্যে ছেড়ে দিলাম। কারো প্রশ্ন থাকলে এক এক করে হাত তোল, প্রশ্ন কর। হাত তুলেছে খায়রুল ইসলাম, আমলা । কি প্রশ্ন বল, -
প্রশ্ন : ফারাজি মুন্সি সাহেব সালাম নিবেন,আপনার দরবারে আমার প্রশ্ন ,দাম্পত্য জীবনে শান্তি পেতে হলে কেমন মেয়েদের বিয়ে করবো ? তাদের কি কি গুন থাকা দরকার জানাবেন।
উত্তর ঃ খায়রুল জানতে চেয়েছে,দাম্পত্য জীবনে সুখী হতে হলে, কি কি গুন সম্পন্ন পাত্রীদের বিয়ে করা দরকার। আচ্ছা খায়রুল তোমাদের তো আগেই একটা প্রবাদ জানা আছে,“ সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে”। কিন্তু এ প্রবাদ এখন ভুল,ভুল, খায়রুল এ প্রবাদ ভুল। এখন এর সাথে যোগ হয়েছে,-
সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে
যদি থাকে গুনবান পতি তার সনে
খায়রুল,তুমি তোমার হবু জীবন সাথীর গুন তালাশ করছো। তার আগে তোমার কি কি গুন আছে এবং তুমি কেমন গুনবান তা তো বল নাই। তোমার গুন তোমার কাছে গুন হতে পারে। কিন্তু অপর কারো জন্যে তার কিছু বিয়োগ করা লাগতে পারে। তারপরই তো নীট প্রোফিট। তোমার গুন গুলি জানিয়ে দিও। জানালে ব্যবস্থাপত্র।
২য় প্রশ্ন : ফারাজি মুন্সির কাছে প্রশ্ন, প্রেম ভালবাসা গোনাহর কাজ কি না ? আমি যদি তাকে পরে বিয়ে করি তাহলে অসুবিধা কোথায় ? মাসুদ করীম, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ ।
উত্তর : মাসুদ করীম,প্রথমেই ভুল করেছ। ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক, আগে সালাম পরে কালাম (কথা)। তুমি সালাম দাওনি। আগেই কথা বলা শুরু করেছ। তারপর তুমি যে পদপে নিতে যাচ্ছ তার সবটুকু ভুল। বিয়ের আগে প্রেম করা হারাম, হারাম আর হারাম। তোমার এ ভুলটি এমন একটি কাজের সাথে তুলনা করা যায় তাহলো, কেউ মলত্যাগের পুর্বে সৌচকর্ম সম্পন্ন করে তারপর যদি মলত্যাগ করে তাহলে কেমন হয় বলত ? তার শরীরের সাথে ঐ অপবিত্রতা স্থায়ী হয়ে থাকবে। তদ্রুপ কেউ যদি হারাম কাজের মধ্য দিয়ে ঐ হারাম কাজকে বৈধ করতে চায় তাহলে তার সাথে ঐ হারাম কি আলাদ থাকে ? ঐ হারাম কাজ ও স্থায়ী হয়ে যায়। আগে বিয়ে কর তারপর যতপার প্রেম কর। এর জন্যে নেকী,নেকী আর নেকী। দরবারের একজন সদস্য হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পার তা আমি আশা করিনি। প্রথম বারের মত দরবারের সদস্য পদ বহাল রাখা হলো।
৩য় প্রশ্ন ঃ ফারাজি মুন্সি সাহেব আপনার লেখা পড়ে আমাদের অত্যন্ত ভাল লাগছে। অন্তরের যুব-বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। আমার লেখাপড়া শেষের দিকে। এখন কর্মজীবনে যেতে চাই। এ সময়ের ফাঁকে নিজের মনের মানুষটিও খোঁজার চেষ্টা করছি। আমার প্রশ্ন বর্তমান যে যুগ জামানা চলছে তাতে তো ভাল মেয়ে পাওয়াই দুস্কর। এ জন্যে আপনার দরবারে কোন আমল আছে কি ?
উত্তর : সালাম নেই। নাম নেই। কি বলে তোমায় আমি ডাকব বল ? প্রথম কথা হচ্ছে, নাম ঠিকানা বিহীন কোন পাত্রকে কোন মেয়ে কি এলাউ করবে ? বোকা ছেলে কোথাকার। ভাল পাত্রী পাওয়ার আমল তো আছেই। আমল অর্থ কাজ,বসে বসে দোয়া দরুদ তেলওয়াত নয়। প্রথম কাজ হচ্ছে,গত ৩য় ও ৪র্থ দরবারে এ ব্যাপারে বিন্যাস্ত ভাবে তথ্য দেয়া আছে ভাল করে পড়ে নাও। অভিভাবক সাথে করে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) যে গুন গুলির কথা উল্লেখ করেছেন,সেই গুন গুলি সম্পন্ন মেয়ে তালাশ কর। এতে শরীয়তের আইন বিধান অনুসরণ করা হবে, উপরন্ত ছেলেরা যদি এমন পাত্রীই খোজ করে বেড়ায় তবে পাত্রীরাও ঐ গুনগুলি অর্জন করার জন্যে তৎপর হবে। রাস্তায়,রিক্সায় আর ঘরের ছাদে কান ধরে বসে থাকতে দেখা যাবে না। অবৈধ হারাম ভাবে প্রেমের চর্চা কমে যাবে।
৪র্থ প্রশ্ন : ফারাজি মুন্সি সাব, আপনার লেখা পত্রিকা ও ইন্টানেটে নিয়মিত পড়ছি । খুব ভাল লাগছে। এ ধরনের লেখার উদ্যোগ বর্তমানে নেই বললেই চলে। তবে আপনার লেখা দেখে আমার ভিতরে অনেক প্রশ্নই জমা হয়েছে। তার মধ্যে একটি প্রশ্ন করতে চাই। যেটি একান্তই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি হিন্দু যুবক। আমি মুসলমান একটি মেয়েকে ভালবাসি। মেয়েটিও আমাকে ভালবাসে। এটি আমাদের কারোর পরিবারই জানে না। আমরা দু’জনে যদি ঘর করতে চাই,তাহলে উভয়ের করণীয় কি ? কি ভাবে আমাদের দাম্পত্য জীবন শুরু করবো ? নাম ্প্রকাশ করতে অনইচ্ছুক,ছাত্র ইবি,কুষ্টিয়া।উত্তর : নাম নেই। জাতে হিন্দু। তোমাকেও বা কি বলে ডাকবো ? যেহেতু সমস্যা আছে,সেহেতু সমাধান করে দেই। তোমার নাম ,নিরব আশা। তোমার সমস্যার সমাধান কঠিন,জটিল আর গ্রহন যোগ্যতার ব্যাপারে খুবই দুরহ। কারণ দু’টি আলাদা ধর্ম। সামাজিক সমাধান নেই, থাকলেও গা-জুরি কেউ সমাধান দিতে পারে। তাতে শান্তি নেই,স্বস্তি নেই,মুক্তি নেই। তবে দু’টি ধর্ম আলাদা হলেও কোন না কোন ধমীয় অনুশাসন মেনেই সমাধান খোঁজ করতে হবে। যেহেতু তুমি হিন্দু তোমার ধর্মীয় অনুশাসনে আগে খোঁজ করা যাক। তোমার ধর্মে চার বেদ,চৌদ্দটি শাস্ত্র আর তার সাথে আছে অনেক উপনিষধ আর ধর্মীয় উপাখ্যান। এর মধ্যে এর কোন সমাধান নেই। কারণ এগুলো বহু পুরানো। এর কোন কোনটি ৪ থেকে ৫ হাজার বছর আগের। যা কিছু পাওয়া যায় তার মধ্যে অবিকৃত কোন ধর্মীয় অনুশাসন সম্বলিত পুস্তক নেই। যা আছে বিকৃত এবং মানুষের তৈরি। শ্রোষ্টা প্রেরীত নয়। এর অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে। তার মধ্যে একটি উদাহরণ দিচ্ছি,মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণ চরিত্র। ১৬ শত গোপী যুবতীদের সাথে তার যে অবৈধ চরিত্র আঁকা হয়েছে তা যে কোন ভগবানের অবতার হতে পারে না। চরিত্রহীন লম্পট মানুষ তাদের কুরুচীর স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে নিজের ইচ্ছা মত এমন চরিত্র একেঁছে । যেমন বাল্মিকি রামের জন্মের পুর্বেই তার ইচ্ছামত রামের চরিত্র একেঁছিল। আসলে শ্রীকৃষ্ণের যদি কোন ভাল চরিত্র থেকে থাকে তা আমাদের কাছে অজানাই রয়ে গেছে। শ্রোষ্টা যুগে যুগে পথ ভোলা সাধারন আর স্বল্প জ্ঞানী মানুষের জন্যে তাদের জীবন পবিত্র ভাবে পরিচালনার জন্যে মহাপুরুষদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। শ্রীকৃষ্ণ যদি তাদের মধ্যেকার একজন হয়ে থাকেন তবে তার ভাল চরিত্র আমাদের জানা নেই। যা আছে তা হলো সে লম্পট। লম্পট চরিত্র অনুসরন করে পবিত্র জীবন অর্জন করা দুরাশ মাত্র।
বেদ,পুরাণ মহাভারত আর রামায়নে শত শত মনিষির নাম পাওয়া যায়। পৌবানিক গ্রন্থের কাল্পনিক কিছু গল্প-গাথা ছড়িয়ে আছে। তাদের সঠিক জীবন বৃত্তান্ত সম্পর্কে কিছু পাওয়া যায় না । যা পাওয়া যায় তা ইতিহাস রঞ্জিত। আর তার সবটুকুই মানুষ সৃষ্টি করেছে। এখানে তোমার বিষয়ের সমাধান পাওয়া গেল না। দেখ, রামায়নে লক্ষনের কাছে সুর্পনখ্ াপ্রেম নিবেদন করেছিল। প্রেম নিবেদন ছিল অবৈধ। সে সুর্পনখার নাক কেটে দিয়েছিল। মুসলমান মেয়েটি যদি তোমার কাছে আগে প্রেম নিবেদন করে থাকে ,তাই বলে তার নাক কেটে দিও না।নাক কাটার ফলে সীতাকে হারাতে হয়েছিল। আল্লাহ না করুন তোমার হয়ত জীবন হারাতে হতে পারে। লক্ষন আজীবন বৌদির (সীতার) রূপ সৌন্দর্যের দিকে দৃষ্টিপাত করেনি শুধু পায়ের দিকে তাকিয়ে কথা বলেছে। এখানে কি বিয়ের আগে প্রেম করা অবৈধ নয়? এখানে কি পরস্ত্রীর রূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা কি অবৈধ নয়। এটুকু ছাড়া পুরান,বেদে,মহাভারত আর রামায়নে বিধর্মী মেয়েকে বিয়ে করার ব্যাপারে কোন সমাধান নেই। সামাজিক ভাবে এর সমাধান যা আছে তাতে জাত থাকে না। এমনকি একই ধর্মে উচু নীচু বংশের বিবাহের সমাধান হিসেবে জীবন দিতে হয়েছে,নতুবা এক ঘরে হয়ে সমাজে নিকৃষ্ট হতে হয়েছে,নতুবা কাশী অথবা বিন্দাবন পালাতে হয়েছে।
এখন থাকল ইসলাম। ইসলাম তোমাকে সমাধান দেবে কি করে ? দিলেই বা তুমি পালন করবে কি করে ? তবে ইসলামে যে সমাধান নেই তা নয়। ইসলামের সমাধান দলিল ভিত্তিক। একেবাওে কিতাবি সমাধান। যে সমাধান দেবে তা মান্য করা তোমার পক্ষে সম্ভব হতেও পারে নাও পারে। তবে ঐ মেয়েটির জন্যে দলিলিক সমাধান রয়েছে। মেয়েটি কোন সমাধান আমার কাছে চায়নি। যদি সে চায় আর তুমিও যদি চাও তাহলে আগামীতে আমার কাছে ইসলামী সমাধান চাইতে হবে। আরও বোধ হয় অনেকের প্রশ্ন আছে। হাতে সময় নেই। আজকের মত এখানেই। আল্লাহ হাফেজ।
আল-কুরআনে বর্ণিত নবী কাহিনী ঃ ধারাবাহিক
গল্পে গল্পে শেখা হবে অনেক কিছু ঃ

হাফেজ রফিক উদ্দিন আহমাদ
মুসা আলাইহিস সালাম : সূচনা পর্ব
এবার মুসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর মুজিজা প্রসংগ। এটিও ঐ সুরা ত্ব-হায়, বেশ বিস্তারিত আছে। শুরু হয়েছে নয় নম্বর আয়াত হতে। এ এক দীর্ঘ বর্ণনা। অনেকটা গল্পের মত। তাই বলে কুরআন শরীফ গল্পের বই নয়। ইতিহাস কিংবা বিজ্ঞানেরও নয়। রসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিশনটা কি? এ প্রশ্নের জওয়াব দানের জন্যই এতে ইতিহাসের কথা আছে। আসমানÑযমীনের সৃষ্টি-কথা আছে। প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের বর্ণনা আছে। বর্ননা আছে মানব সৃষ্টি-রহস্যেরও। কুরআন মানুষের বিবেক-বুদ্ধির উন্মেষ ঘটায়, বিকাশ চায়। আখ্লাক বা চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখে। ব্যক্তি ও সমষ্টির সুখ চায়। শান্তি চায়। কল্যাণ চায়। চায় মানুষের নিরাপত্তাও।
এ জন্য সবার উচিত জেনে-বুঝে কুরআন পড়া। তা হলেই মজা পাওয়া যাবে। সঠিক পথ চেনা যাবে। যেমন উমার রদিয়াল্লহু আনহুর জীবনের মোড় পরিবর্তন। কুরআনই সাধারণ এই যুবককে শাসক বানিয়েছিল। অর্ধেক পৃথিবীর সুযোগ্য শাসক। অসাধারণ। অনবদ্য। যার তুলনা নেই, পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও।
সুুরা ত্ব-হার নয় নম্বর আয়াত। আল্লাহ সুবহানাহু তা’য়ালা প্রশ্ন করছেন। কাকে প্রশ্ন করছেন? নবী মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে। কি প্রশ্ন। ‘আর তোমার কাছে কি মুসার খবর আছে?’ পরে যা কিছু বর্ণনা করা হবে, তার প্রতি আগ্রহ তৈরী করাই এর উদ্দেশ্য। এ রকম আয়াত আরো আছে। (যেমন সুরা ক্কদরে আছেÑ‘তুমি কী জান, ক্কদরের রাত কি?’)
এরপর দশ নম্বর আয়াত। এখান হতে মূল কাহিনী শুরু:Ñ
“যখন সে আগুন দেখল। নিজের পরিবার-পরিজনকে বলল: ‘একটু দাঁড়াও, আমি একটি আগুন দেখেছি। হয়ত তোমাদের জন্য এক-আধটু অংগার আনতে পারব। অথবা সেখানে কোন পথের দিশা পাব।’ প্রশ্ন জাগেÑএ কথাটি কে বললেন। কেন বললেন। কোথায় বললেন। তিনি কি পথ হারিয়েছিলেন। যাচ্ছিলেনই বা কোথায়।
তাফসীরকারকগণ এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন, হাদিস ও ইতিহাসে। তাঁরা অনেক পরিশ্রম করেছেন। গবেষণা করেছেন। আবার প্রশ্ন আসতে পারেÑ হাদিস কী। উত্তর হলÑ শেষ নবী মুহাম্মাদ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা বলেছেন, করেছেন ও সমর্থন দিয়েছেনÑতা-ই হাদিস।
তাফসীর থেকে জানা যায় যে:Ñ
চার হাজার বছর আগের কথা। র্শিক ও পাপাচারের দেশ ইরাক। নমরুদ তার রাজা। সেই দেশে জন্মেছিলেন এক মহামানব। নাম তাঁর ইবরাহীম আলাইহিস সালাম।৪ আল্লাহ তাঁকে নবীরূপে বাছাই করলেন। তাই মানুষকে তিনি ডাকতে থাকলেনÑআল্লাহর পথে। শুরু হল তাঁর উপর নানান যুল্ম-অত্যাচার। পড়লেন তিনি কঠিন কঠিন বিপদে। রাজার লোকেরা বানালো জ্বলন্ত আগুনের কুণ্ডলী। সে কুণ্ডলিতে ফেলা হল তাঁকে। ধৈর্য ধরলেন তিনি। আল্লাহর হুকুমÑআগুন তাঁকে পোড়াতে পারলো না। পাস করলেন তিনি। ওরা দেশ থেকে বের করে দিল তাঁকে। বহু দূর দূরান্ত পার হলেন তিনি। ইরাক থেকে ফিলিস্তিন। তারপর মক্কায়। আরেকবার ফিলিস্তিন। আরেকবার মক্কায়। হাজার হাজার মাইল। শুুধুই পায়ে হাঁটা। চেনা নেই, জানা নেই। সাথী নেই, সঙ্গী নেই। এর অধিকাংশই তখন ছিল বিজন মরুভূমি। তারপরেও আল্লাহর হুকুম। হুকুম মানাই বান্দার কাজ। নবী হলে তো কথাই নেই। সবশেষ হুকুমÑ প্রিয় জিনিস কুরবানী কর। তাই করলেন তিনি। আদরের ধন ইসমাঈল আলাইহিস সালামকে কুরবানী করলেন। এ পরীায়ও তিনি পাস। যে জন্য আজও চালু আছে কুরবানীর নিয়ম। মুসলিম সমাজে, সুন্নাতে ইবরাহীম হিসেবে। বড় বড় পরীায় পাস। তাই সবচেয়ে বড় পুরস্কার। বড় মর্যাদাÑমুসলিম জাতির পিতা। যত দিন দুনিয়ায় মুসলমান থাকবে, ততদিন এ মর্যাদা তাঁরই। কিয়ামাত পর্যন্ত। আল্লাহকে মুহাব্বাত করেছেন তিনি, প্রাণ উজাড় করে। তাই তিনি পাস করেছেন। তাঁর উপাধি ছিল খলীলুল্লাহ। যার মানে হল আল্লাহর বন্ধু।
ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ছিল তিন স্ত্রী। বিবি হাজেরার গর্ভে ইসমাঈল আলাইহিস সালাম। বিবি সারার গর্ভে ইসহাক আলাইহিস সালাম। এই দুই স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি বিয়ে করেন কান্তুরাকে। কান্তুরার সন্তানদের বিষয়ে পরে আলোচনা আছে। এখন হযরত ইসমাঈল ও হযরত ইসহাকÑআলাইহুমাস সালাম সম্পর্কে কথা।৫ ইসমাঈল আলাইহিস সালাম প্রতিষ্ঠিত হন মক্কায়। ইসহাক আলাইহিস সালাম বসতি গড়েন ফিলিস্তিনে। তাঁরই পুত্র ইয়াকুব আলাইহিস সালাম। যাঁর আল্লাহ প্রদত্ত উপাধি ইসরাঈল। ইসরাঈল অর্থÑ আল্লাহর বান্দা। এই উপাধিমূলক নামেই তাঁর বংশকে বলে ‘বনী ইসরাঈল’। তিনি বাস করতেন কেনানে। মিসর হতে উত্তর দিকে। তাঁর ছিল বার পুত্র। এগারতম পুত্রের নাম ইউসুফ আলাইহিস সালাম। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সিদ্ধান্তÑইউসুফ আলাইহিস সালামকে মিসরে প্রতিষ্ঠিত করবেন। তিনি তা করলেন। যে কাহিনী সুরা ইউসুফে পাওয়া যায়। অনেক লম্বা সে কাহিনী। এটি খৃষ্টপূর্ব ১৯০০-এর কাছাকাছি সময়ের কথা। ইউসুফ আলাইহিস সালাম রাজত্ব করেন মিসরে। আশি বছর যাবত। (এ নিয়ে একটি পূর্ণাংগ পৃথক পুস্তক রয়েছে)।
সাহসী সৈনিকদের গল্প ঃ
সত্যের পিপাসু আবু মাসউদ (রাঃ)

জোসনার আলোক ধারা ছড়িয়ে পড়েছে চার পাশে।
মরুপ্রান্তর, জনপদ- সবই কেমন ফকফকে সাদা।
মক্কার অলিতে-গলিতে কেবলই গুঞ্জন-
কে এনেছেন, কে এনেছেন এমনই আলোক ধারা?
সবার মধ্যে কৌতূহল। সবার মধ্যে জিজ্ঞাসার বৃষ্টি ঝরছে অবিরাম।
তিনি তো আর কেউ ননÑ প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সা)।
তাঁর পাশেই যত নত্রের ভিড়। তাঁর দিকেই দলে দলে ছুটে আসছে সত্য পিপাসু পথিক।
তেমনই একজন সত্যের পিপাসু আবু মাসউদ আল বদরী (রা)।
আবু মাসউদ ডাক নাম, আর এ নামেই তিনি ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। আসল নাম উকবা এবং পিতার নাম আমর ইবন সা’লাবা। সর্বশেষ বাইয়াতে আকাবায় যোগ দিয়ে সেখানেই ইসলাম গ্রহণ করেন।
উহুদ এবং উহুদ-পরবর্তী কাফিরদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সকল যুদ্ধে তিনি রাসূলুল্লাহর (সা) সাথে যোগ দেন।
তিনি বদরে যোগ দেন এবং এ কারণেই তাঁকে বদরি বলা হয়।
নবুওয়াতের যুগ ও প্রথম তিন খলিফার সময় পর্যন্ত আবু মাসউদ মদিনায় ছিলেন। জীবনের কোন এক পর্যায়ে কিছু দিনের জন্য বদরের পানির ধারে বসবাস করেছিলেন।
হযরত আলীর খিলাফতকালে মদিনা ছেড়ে কুফায় চলে যান এবং সেখানে বাড়ি তৈরি করে বসবাস করেন।
তিনি ছিলেন হযরত আলীর (রা) একান্ত সহচর। আলীর (রা) সময়ে তিনি কুফায় যান এবং আলী (রা) সিফফিনে যাওয়ার সময় তাঁকে কুফার আমিরের দায়িত্ব দিয়ে যান।
হযরত আবু মাসউদের এক পুত্র ও এক কন্যার পরিচয় জানা যায়। পুত্রের নাম বাশির এবং কন্যা ছিলেন হযরত ইমাম হাসানের (রা) স্ত্রী। তাঁরই গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন হযরত যায়িদ ইবন হাসান। বাশিরের জন্ম হয় রাসূলুল্লাহর (সা) জীবদ্দশায় বা তার কিছু পরে।
হযরত আবু মাসউদ (রা) রাসূলুল্লাহর (সা) হাদিসের প্রচার-প্রসারের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করেন। হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবীদের তৃতীয় তবকা বা স্তরে তাঁকে গণ্য করা হয়। হাদিসের বিভিন্ন গ্রন্থে তাঁর বর্ণিত ১০২টি হাদিস পাওয়া যায়।
রাসূলুল্লাহর (সা) জীবনাচারের অনুসরণ এবং সত্যের প্রচার ছিল তাঁর চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
রাসূলুল্লাহর (সা) আদেশ-নিষেধকে অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে পালন করতেন। একবার তিনি তাঁর এক দাসকে মারছেন। এমন সময় পেছন থেকে আওয়াজ ভেসে এলো : আবু মাসউদ! একটু ভেবে দেখ। যে আল্লাহ তোমাকে তার ওপর মতাবান করেছেন, তিনি তাকেও তোমার ওপর মতাবান করতে পারতেন।
আওয়াজটি ছিল রাসূলুল্লাহর (সা)। আবু মাসউদ ভীষণ প্রভাবিত হন। সেই মুহূর্তে তিনি শপথ করেন, আগামীতে কোনো দিন আর কোনো দাসের গায়ে হাত তুলবেন না। আর সেই দাসটিকে তিনি মুক্ত করে দেন।
সত্যের দায়িত্ব পালন থেকেও তিনি কখনো উদাসীন ছিলেন না। আর এ ব্যাপারে ছোট-বড় কারো পরোয়া করতেন না।
হযরত মুগিরা ইবন শুবা (রা) তখন কুফার আমির, একদিন তিনি একটু দেরিতে আসরের নামাজ পড়ালেন। সাথে সাথে আবু মাসউদ প্রতিবাদ করলেন। তিনি বললেন : আপনার জানা আছে, রাসূল (সা) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জিবরিলের বর্ণনা মত সময়ে আদায় করতেন, আর বলতেন, এভাবেই আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি নিজে রাসূলুল্লাহর (সা) সুন্নাতের হুবহু অনুসরণ করতেন। একদিন তিনি লোকদের জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি জান রাসূলুল্লাহ (সা) কিভাবে নামাজ আদায় করতেন?
তারপর তিনি নামাজ আদায় করে তাদেরকে দেখিয়ে দেন।
নামাজের জামায়াতে গায়ে গা মিশিয়ে দাঁড়ানো রাসূলের (সা) সুন্নাত। তিনি যখন দেখলেন, লোকেরা তা পুরোপুরি পালন করছে না, তখন বলতেন : এমনভাবে দাঁড়ানোর ফায়দা এ ছিলো যে, তাঁরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। এখন তোমরা দূরে দূরে দাঁড়াও, এ জন্যই তো বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
হযরত আবু মাসউদ প্রকৃত অর্থে ছিলেন একজন সত্যের সৈনিক।
ছিলেন রাসূলের (সা) পূর্ণ অনুসারী।
সাহস ছিলো তাঁর একান্ত ভূষণ। যুদ্ধের ময়দানে দেখা যেত তাঁর সেই সাহসের ফুলকি।
ঈমানের দীপ্তিতে ভাস্বর ছিলেন তিনি। অনেক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তারপরও জ্ঞানতৃষ্ণা মিটতো না তাঁর। এ জন্য সকল সময় ছায়ার মত রাসূলের (সা) কাছেই ছুটে যেতেন।
যেমন ছুটেছেন তিনি সত্যের পথে আজীবন পানির ধারে, এই ন্যায়ের পথিক।
এ জন্যই তো তিনি স্পর্শ করতে পেরেছিলেন চূড়ান্ত সফলতার আকাশ।
আমরাও পারি বটে তেমনটি, যদি সত্য ও সাহসের পথে সর্বদা চলমান থাকি।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
আজ তো দেখছি আরও অনেক নতুন মুখ। অনেকেরই জায়গা দেয়ার মত জায়গা নেই। মুন্সিকে তো আগে কেউ দামই দিত না। এখন অনেক অচেনা মানুষও সালাম দেয়। ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী কোম্পানীর এ্যাডের মত। মেয়েটির চেহারা সুরাত নযর কাড়ার মত ছিল না। চেনা লোকের সাথে কথা বলতে গেলে অনেকেই না চেনার ভান করত। মেয়েটি ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী ক্রিম মাখা শুরু করেছিল। সাথে সাথে তার চেহারার সুরাত মানুষের নযর কাড়তে লাগলো। ওমনি চেনা মানুষই শুধু না, অচেনা মানুষও যেচে কথা বলতে শুরু করল। চেহারা সুরাতের আর কি গুন ? গুন হলো তো ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী কোম্পানীর ক্রিম। তেমনি মুন্সির আর কি গুন, গুন হলো তো ঐ গবেষনা লব্ধ অভিজ্ঞতা বিধির। দরবার বসিয়ে অভিজ্ঞতা বাজার জাত করার সাথে সাথে সালামের বহরও বেড়ে গেছে প্রচুর।
আলোচনার প্রসংগ বিয়ে। আজকে সেই বিয়ের পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের অভিজ্ঞতা বিধি নিয়ে আলোচনা। পাত্রী নির্বাচন পাত্রের জন্যে আর পাত্র নির্বাচন পাত্রীর জন্যে বড় জটিল ব্যাপার। উভয়ের জন্যে বাছায়ের মূল কেন্দ্র হলো মন-মানসিকতার গতি প্রকৃতি নির্ণয়। গতি প্রকৃতি মাপার কোন কাটা-কম্পাস বা গজ-ফিতা বাজারে নেই। মুন্সির অভিজ্ঞতা বিধিও এখানে অচল। উপায় ? উপায় তো একটা আছেই। আল্লাহ মানুষকে উপায়হীন করে পৃথিবীতে ছেড়ে দেননি। আল্লাহর রসুল (সাঃ) মন-মানসিকতা নিয়ে বাহ্যিক যে বৈশিষ্ট্য গুলোর উল্লেখ করেছেন, তার উপর পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের আর কোন মোক্ষম পদ্ধতি নেই।
আসলে মন একটা আলাদা জিনিষ। কন্ট্রোল মানে না। বশেও রাখা যায় না। এক সেকেন্ডে আমেরিকা,ভারতের মালদাহ,মঙ্গলগ্রহ,সিদরাতুল-মুনতাহা হয়ে দেখ মজমপুর রেল গেটে তোমার সাথেই বসে আছে। তবে খুবই অস্থির হয়ে পড়ে নামাযের সময়। ঘাড় ধরে এক মুর্হুতও স্থির রাখা যায় না। তারপরও সারা জীবন ধরে চেষ্টা করাই জিহাদ। নিজের মনই এমন। অন্য আর একটার সাথে মেলানো কি সম্ভব ? যত চেষ্টাই কর মনের মত মন জগতে মেলানো যাবে না। তারপরও কাছাকাছি বসবাসের যোগ্য মন-মানসিকতার মানুষ খোঁজ করাই হচ্ছে পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্য। নারীর মন কেমন তা জানিনে,তবে কবি সাহিত্যিকেরা এক তরফা দোষ দিয়ে বলে থাকেন,
নারীর মন,সে তো সখা
শত বর্ষের সাধনার ধন
ফট করে নারীদের ঘাড়ে দোষ চাপানো তাদের সহজাত স্বভাবে দাড়িয়ে গেছে। আবার তারাও কম যায় না। কথায় কথায় দোষ চাপায়। ঐ একই কথা,পুরুষ শাসিত সমাজ,নারীর দাম দেয় না। বোন,আগে পিছে চিন্তা না করে এমন দোষ চাপাচ্ছো কেন ? পুরুষের দোষ কি ? “ আর রেজালু ওয়া ক্ক ও মুনা আলা ন্নেছা”। আল্লাহ সে কাম তার কিভাবে আগেই সেরে দিয়েছেন। নারীর উপর পুরুষের কর্তৃত্ব দিয়ে। খবদ্দার তার বিধানের বাইরে যাওয়া যাবে না। আল্লাহ পুরুষদেরকে শাসন করার দায়িত্ব দিয়েছেন,এতে অভিযোগ করার কি আছে ?
আমি কারো পক্ষে কথা বলব না। নারী-পুরুষের ওসব ঝগড়া এখন থাক। সবচেয়ে মহত্তোম কাজ হলো,মনের মত মন খোঁজ করা। একেবারে মনের মত না পাওয়া গেলেও অন্তত পাশাপাশি বসবাসের যোগ্য মন পাওয়ার চেষ্টা করা দরকার। মনের এমন প্রকৃতি,দীর্ঘদিন পাশাপাশি বসবাস করার পরও দুই মনের মাঝে কমপক্ষে সাড়ে তের ইঞ্চি ফাঁক বয়েই যায়। অভিজ্ঞতার দৃষ্টান্ত তার প্রমান। সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। প্রেমের নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ। তা দীর্ঘ বিশ বছর হবে। সামনে আরও অনেকদিন বাঁচার ইচ্ছে। তাড়াতাড়ী মরার তেমন কোন চিন্তা ভাবনা নেই। এমন সুখ রেখে কি কেউ মরতে চায় ? মরতে যদি হয়ই তবে দু’জনে একই কবরে অবস্থান করার তীব্র বাসনা। বলত,এমন বাসনা পুরণ হওয়া কি সম্ভব ? একই কবরে যেতে হলে একই সাথে মরতে হবে। বাংলা দেশে আপাতত: এমন ব্যবস্থা নেই। তবে সম্ভব হতে পারে,আমেরিকা যে ভাবে ড্রোন হামলা চালিয়ে আফগানিস্তানে আর পাকিস্তানে এক এক বারে শত শত মানুষ হত্যা করছে,শুনেছি এক লাইনে কবর খুঁড়ে লম্বা কবরে পাশাপাশি তাদেরকে একই সাথে দাফন করা হচ্ছে। এমন ভাগ্য হলেও হতে পারে। কিন্তু এখন আফগানিস্তানে যাওয়ার ভিসা বন্ধ।সংগত কারণেই তাদের ইচ্ছে পুরণ হচ্ছে না। এখানেই মরতে হবে। বেশ কিছুদিন ধরে স্ত্রী রোগ শয্যায়। কঠিন মরণ ব্যাধি। সময় একেবারে কাছাকাছি। স্বামীকে কাছে ডেকে বলল,ওগো আমি তো চলে যাচ্ছি। শেষ বারের মত তোমার মুখ দিয়ে একটা কথা শুনতে ইচ্ছে করছে,তুমি আমায় কেমন ভালবাস ? কেমন ভালবাসি তা পৃথিবীর কোন ভাষা দিয়ে বোঝাতে পারব না। তবুও বল না,রুগ্ন স্ত্রীর শেষ অনুরোধ। স্বামী বেচারাকে অন্য কোন ভাষায় নয়, অগত্যা বাংলাতেই ব্যাক্ত করতে হলো, যার মর্ম হলো,পৃথিবী একদিক আর তুমি একদিক। পৃথিবী ছাড়তে পারি কিন্তু তোমাকে কিছুতেই ছাড়তে পারব না। স্ত্রী খুশী হয়ে বলল, আমি যদি এখন মরে যাই তাহলে তুমি কি খুব কষ্ট পাবে ? পাব না মানে,আমি তো বাঁচবোইনা,পাগল হয়ে যাব। ওগো,তুমি তাহলে তো আর বিয়ে করবা না ? ওসব তুমি ধরো না,পাগলে কি না করে।
বেচারী ইহ জীবনে সতীনের ঘর করেনি। মৃত্যুর পরও সতীনের ঘরের অশান্তি সহ্য করতে নারাজ। বেচারা স্বামী মনে হলো ওঁৎ পেতে আছে। মৃত স্ত্রীর দোয়া-মাহফিলের কাজটা নতুন স্ত্রীর হাত দিয়ে করবে। কাকে দোষ দেব,আল্লাহ চারটার অনুমতি দিয়েছেন। আর সে মৃত্যুর পর একটারও অনুমতি দিতে চায় না। এটা দরদের কারণে না সতীনের প্রতি হিংসের কারণে বুঝা মুস্কিল। এ জন্যে কবি বুঝতে না পেরে বলল,নারীর মন,সখা শত বর্ষের সাধনার ধন। তবে বুঝা মুস্কিল হলেও হিংসেটাই এখানে মুখ্য। কারণ নারী বলে স্বামীকে বাঘের মুখে দিতে পারি কিন্তু সতীনের ভাগে দিতে পারি না। আবার চারটার অনুমতি আছে বলেই ধৈর্য সহ্যের মাথায় বাড়ি দিয়ে স্ত্রী রোগ শয্যায় আর তুমি প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছো ? কবরে শোয়াতে যে দেরী! এ কেমন পাগল ? জসিম উদ্দিনের মত ত্রিশ বছর চোখের জল ফেলে ধৈর্য ধারণ নাইবা করলে, তাই বলে কি চোখের এতটুকু আঠা পর্দা নেই ? দাঁড়াও তবুও একটা বিষয় লক্ষ্য করার আছে। পাশাপাশি দীর্ঘ দিন বসবাস করে অন্তত কবর পযর্ন্ত পৌঁছেছে। মাঝখানে তেমন কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। এ জন্যে তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তোমরা অন্তত: এতটুকু পাওয়ার জন্যে খুঁজাখুঁজি করতে পার।
এবার বল, কেমন পাত্রী চাও ? সমাজের প্রায় সকল মানুষ যা চায় তোমরাও বোধ হয় তেমনি পাওয়ার জন্যে রং তুলি নিয়ে ছবি আঁকতে বসে গেছ ? অমন ছবির প্রকৃত রূপ কি দাড়াবে জান ? একদিন পথে হাটছি,তেমন চিনি না তাকে। সালাম দিয়ে রিকয়েষ্ট করল, মুন্সি সাব,ছেলে বিয়ে করাব। একটা ভাল পাত্রী খোঁজ করে দ্যান। কি রকম পাত্রী চান ? ছেলের বরাত দিয়ে যা শুনালো তার সব মনে নেই। যা আছে তাহলো গায়ের রং দুধে আলতায় মেশানো হবে,মুখ গোলাপের পাপড়ির মত,চোখ হবে পটল চেরা কিন্তু চাহনি হবে হরিণের মত মায়াবি, নাক বাঁশির মত,ভ্রু হবে চিকন ঘন তবে জোড়া ধনুকের মত বাঁকা,বাচা মাছের মত লাল টুকটুকে ঠোঁট,চুল হবে আগার দিকে কোকড়ানো এবং ঘন কালো মেঘের মত। কন্ঠ স্বরে মধু ঝরবে। চলার গতি হবে শান্ত, মৃদু মন্দ বয়ে যাওয়া ঢেউয়ের মত নৃত্যময়, এক হারা গড়ন হবে শরীরের গঠন। আচ্ছা, এবার বল এর সবটুকু দিয়ে আল্লাহ কারো চেহারা সুরাত গড়েছেন কি না ? পরীদের কথা শুনেছি। সেখানেও এমন পাওয়া যায় কি না দেখতে পারলে হতো। বললাম এমন মেয়ে কোন দিন মাটি দিয়ে হাটবে বলে মনে করেছেন ? তাহলে কিভাবে চলাফেরা করবে,ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করল। বললাম স্বামীর ঘাড়ে চড়ে। আশ্চার্য বিদঘুটে মানুষ ? আমার দরবারের যুবকেরা,আমার কথায় মন খারাপ হয়ে গেল ? বললাম তো ঐ রকম মেয়েরা স্বামীর কাধে চড়ে চলাফেরা করবে। যদি ঐ রকমই চাও তবে এখন থেকে পুষ্টিকর খাদ্য খাও আর নিয়মিত ব্যায়াম করতে শুরু কর।
এবার যারা কাছাকাছি মনের জীবন সাথী চাও তাদের সমস্যা নেই। দেখ কত সুন্দর সমাধান দিয়েছেন বিশ্ব জাহানের মুক্তির দূত মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ (সাঃ)। তাঁর নির্বাচন কাঠামোতে পাত্রীর প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো দীনদারী,দুই নম্বর বৈশিষ্ট্য ধন সম্পদ, তিন নম্বর বৈশিষ্ট্য রূপ সৌন্দর্য। উপরের ঐ অত শর্তের প্রয়োজন নেই,মাত্র তিনটা বৈশিষ্ট্য। বৈশিষ্ট্যের প্রথম নম্বরে দীনদারী বলার পরও শেষে আবার জোর দিয়ে বললেন,তুমি দীনদার পাত্রীকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দেবে,এতে তোমার কল্যাণ হবে। ধন সম্পদ বা রূপ সৌন্দর্যে কল্যাণ আছে সে কথা বলেন নি। কাধে করে টানা কষ্ট থেকে যদি বাঁচতে চাও তাহলে রসুল (সাঃ) এ নিদের্শ মোতাবেক দীনদার পাত্রীর ছবি হৃদয় পটে অংকিত করে রাখ। সময় হলে যাতে মিলিয়ে নিতে পার। দীনদার পাত্রী যদি চিনতে চাও তহলে তাদের দীনের জ্ঞানসহ শিক্ষা,নামাযি,পর্দানশীন,আল্লাহর ভয়ে হালালকে হালাল আর হারামকে হারাম বলে মানে,জীবন সাথীর জন্যে হৃদয় ভরা ভালবাসা সহযোগীতা,সহমর্মিতা,আস্থা আর বিশ্বাস নিয়ে যে পাত্র বুক বেধে বসে আছে তাকে খুঁজে বের কর। মনে হচ্ছে পেছন থেকে যুবতীরা কি যেন বলতে চাচ্ছে ? আলহামদুলিল্লাহ,ওরা বলতে চাচ্ছে,আজ থেকে ওরাও দীনদার পাত্রীর চরিত্রের রূপ চর্চা করতে চায়। তাহলে তোমরা দীনদার পাত্রীর চরিত্রের রূপ চর্চা পার্লারে ভর্তি হয়ে যাও। পার্লারের নাম ? কেন শোননি ? ছাত্রী সংস্থার পার্লার। আশে পাশের বোনদের জিজ্ঞেস করে জেনে নিও। আজ আর সময় নেই। আল্লাহ হাফেজ।
ফারাজি মুন্সির দরবার
প্রসঙ্গঃ বিয়ে (দ্বিতীয় পর্ব )
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
এক সপ্তাহ পর দরবার আবার শুরু হলো। সকলকে শুভেচ্ছা। আজকে কিছু নতুন মুখ দেখেিত পাচ্ছি। আসতেই হবে। মধু যেখানে মৌ-মাছির গুন গুনানিও সেখানে। গতদিন ৯৮.৭৩ শতাংশের বিবাহ কর্ম সম্পাদনের পর বিবাহ উত্তর যন্ত্রনার উৎপত্তি এবং তার পরিণতি সম্পর্কে দরবারের এক গবেষনার ফল তোমাদের উপহার দিয়েছি। তোমরা নিশ্চয়ই একটা পাকা-পোক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছ। অভিজ্ঞতা এখন থেকেই কাজে লাগাবে। অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। এটাই হবে তোমাদের জীবন সুন্দর করার একমাত্র পথ। সচেতন থেকো। সচেতন না হলে জীবন চলার পথে ফুটন্ত গোলাপ বাগানের প্রস্ফুটিত গোলাপের দিকে কে না তাকাতে চায় ? তাই বলে ইচ্ছে হলেই তো হাত বাড়িয়ে একটা ছিড়ে নিয়ে নাকের কাছে ধরা যাবে না। এটা হবে অবৈধ হস্ত-প্রসারণ,সম্পূর্ন নিষিদ্ধ, সম্পূর্ন হারাম। অবশ্য চুক্তি করে গ্রহন করাতে বাধা নেই। বিবাহ জীবনটাও তাই। দাঁড়াও এখনই নয়। চুক্তি করার সময় এখনও হয়নি।
আগে ভাগেই চুক্তি করার জন্যে এত পাগল কেন ? পাগল তো হয় বুড়োরা। বাংলা বাগধারা মুখস্ত নেই ? বিয়ে পাগলা বুড়ো,মনে পড়ে ? যুবক-যুবতীরা পাগল হলেও বিয়ের কথা আকার ইংগিতে বলে। চাষী তার ছেলেকে নিয়ে পাট নিড়াচ্ছে। ছেলে বলছে,বাজান পাটেতো এবার অনেক টাকা হবি। বাপ বলল,কষ্ট যখন করতিছি তাতো হবিই। তাহলি তো এবার আমাগের বাড়ী বিয়ের ধুম পড়ে যাবেনে। কার বিয়ে রে ? ধরেন,ক্ষেতের থেকেই। কথার ধরন কত সুন্দর, কত পোলাইট। ওরা বিয়ের আগে যন্ত্রনার ফাঁদ পাতে না। বাপ যেখানে সম্মন্দ করায় সেখানেই বসে যায়। এমন সুন্দরীর বায়না ধরে না,যা খুজেই মেলানো যায় না। বিরক্ত হয়ে বাপ মনে করে,ঢাকায় এ রকম সুন্দরী তৈরীর কারখানা আছে কি না ? থাকলে সেখানেই যেত। যুবতীদের ইংগিত হলো,আব্বু আমি তোমার ছেড়ে কোথাও যাব না। কেন রে শশুর বাড়ীতে যে যেতে হবে? কত সুন্দর ভাবে বাপের মনে নিজের শশুর বাড়ীর কথা মনে করিয়ে দেয়। তাগিদ দিয়ে বলে,আব্বু ওকথা তুমি মুখেও এনো না। আব্বু তখন বুঝতে পারে মেয়েদের ছি মানে জ্বী,না মানে হাঁ।
একটা ঘটনা শুনাতে চাচ্ছি। নিজের ঘটনা বলে শরম লাগছে। শরম লাগলেও বলতে হবে। অভিজ্ঞতা গোপন করা ঠিক না। কেউ অভিজ্ঞতা পেল না আর অভিজ্ঞতার অভাবে যদি তার ক্ষতি হয় আর সে যদি আুল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে ? বিষয়টি হলো,আমার বাপ তো বিয়ের জন্যে পাগল। না,না তার জন্যে না,আমাকে বিয়ে করাবে। অনেক দিন ধরে পেছনে লেগে আছে। কিন্ত ক্লিয়ারেন্স পাচ্ছে না। কেবল বি,এ পাশে উত্তীর্ন হয়েছি। চাকরী ক্ষুদ্র। বাধ্য হয়ে দেরী করতে হবে। নাÑরাজি দরখাস্ত পেশ করে দিলাম। দরখাস্ত পেশ করার কারণে পরীক্ষা চালালো আমি যন্ত্রনার ফাঁদ পেতে রেখেছি কি না। ফাঁদ পাতবো কি করে ? কোন কথা বলেছি নাকি কারো সাথে কোন দিন ? কো-এডুকেশনেই ছিলাম,স্কুল,কলেজ,ভার্সিটি সব জায়গাতেই। কত চোখা চোখী হয়েছে কিন্তু কথা বলিনি। মুখে তালা মারা যায়, চোখে তো মারা যায় না। চোখের উপর নীচের পাতায় যদি আংট্ াকড়া থাকতো তাহলে তালা মারা সম্ভব ছিল। কথা না বলতে বলতে এমন জং ধরে গিয়েছিল মনে হচ্ছিল,আসল সময় মুখ দিয়ে হয়ত কথা বের হবে না । শ্রীকান্ত যারা পড়েছো তার একটা ঘটনাংশ। বার্মা(এখন মায়ানমার) যাওয়ার পথে (সম্ভবত তৃতীয় পর্বে) জাহাজে দুই হিন্দু মহিলার একজনের স্বামী ছিল মুসলমান। অন্য মহিলা আৎকে উঠে প্রশ্ন করল,ছি ছি,মুসলমান ? মুসলমান হলে হবে কি দিদি, পচিশ বছর ঘর করনু কিন্তু মিন্সির হেসেল মাড়াতে দেই নি। অর্থাৎ সে যাত মান ঠিক রেখেছে। আমিও কিন্তু তাই। ১৬ বছর এক লাগাড়ে এক সাথে লেখাপড়া করনু, কথা বলা তো দুরে থাক কারো ছায়া পযর্ন্ত মাড়াইনি। ঘটনাটা গিনেজ বুকে রের্কড করার মত নয় কি ? নিজের বলে বলছিনা। একেই বলে ষ্টিল চরিত্র।
বেশী দিন আর নিশ্চিন্তে থাকতে পারলাম কই। বাপ না রাজি আবেদন খারিজ করে দিলেন। বললেন তৈরী হও,পাত্রী দেখতে যেতে হবে। বললাম আপনার পছন্দ হলেই হবে,আমার যাওয়ার দরকার নেই। না,যেতে হবে, আমার পছন্দ হলে কবুল কলমা একবারে সমাধা করেই আসব। দেখেছো, আই হ্যাভ নো রাইট টু সে।
যাই হোক, বেশী না হলেও মনের মধ্যে একটু একটু ফুর্তি শুরু হয়ে গেল। পাত্রী চোখে দেখা জায়েজ হলেও এক নজরের বেশীক্ষণ চোখ রাখতে পারিনি। যা চোখে পড়লো,তা লেন্সের মধ্যে একটা ঝাপসা ছুরাত আটকে গেল। দ্বিতীয় বার আর একটা ¯œ্যাপ নিয়ে ঝাপসা পরিস্কার করার সাহস হলো না। পার্শ্ব থেকে একজন জিজ্ঞেস করল ভাল করে দেখেছ ? মাথা কোনদিকে কতবার নাড়া নাড়ি করেছিলাম তার সত্যতা এখন আর যাচাই করা সম্ভব না। অন্যদিক দিয়ে বেঁচে গেলাম। পাত্রী পছন্দ হয়েছে কি না,কন্যা পক্ষের এমন জিজ্ঞাসায় বাপ সরাসরি বলে দিলেন কলমা কবুল হবেÑএবার বোঝ,আমি কেউ না। আমি শুধু কবুল বলার মালিক। শরীয়ত অনুমতি দিলে সেট্ওা বোধ হয় আমার জন্যে বরাদ্দ না রেখে নিজেই পালন করে ফেলতেন কিনা আমার সন্দেহ হচ্ছিল।
প্রতিবেশী এক মহিলা মন্তব্য করেছিল,কাকের মুখে কমলা। বলার কারণও ছিল। অনেকে বলে,বংশের অন্যান্য ভাইদের মধ্যে আমি নাকি রাজপুত্রের মত। রাজপুত্র না হলেও রাজবাড়ীর কাছাকাছি জন্ম গ্রহন করার মত সুরাত আুল্লাহপাক দিয়েছেন । তাই বোধ হয় মহিলারা মন্তুব্য করে ফেলেছে কাকের মুখে কমলা। তাদেরই বা দোষ কি ? আবার আমার বাপের পছন্দ করার দোষই বা কি,ওর জন্মদাতা বাপের দোষই বা কি ? পরিবর্তে আমার মহান রব যে নেয়ামত আমার ভাগ্যে বরাদ্দ রেখেছিলেন তা আমার জীবনের এক পরম পাওয়া। আমরা এখন ৯৩.৪১ শতাংশের সদস্য ভুক্ত হয়ে কালাতিপাত করছি। অনেকে এ নিয়ে হিংসেও করে থাকে। আগেই উুেল্লখ করেছি বিয়ের মধ্যে হিংসাও আছে।
এবার হবে ৯৩.৪১ শতাংশের সুখময় জীবনের স্বাদ আস্বাদনের কারণ নির্ণয়এবং সে সম্পর্কে তার গবেষনালদ্ধ অভিজ্ঞতার বয়ান। যে সকল যুবক প্রেমের ফাঁদে আটক করে ঘরে তোলেনা বা ঐ পথ ধরে যে যুবতীরা কারো গৃহে প্রবেশ করে না তাদের বিবাহকে কন্ট্রাকট মেরেজ বলে। সংগাটা এখনই মুখস্ত করে ফেল । এ বিয়ের ধারা গুলো হোল,কেউ কাউকে হয়ত কোন দিন দেখেনি, পরিচয় নেই, কারো নামই কেউ জানে না। ফলে প্রথম পরিচয়ে জিজ্ঞেস করতে হয়,কি নামে তোমায় আমি ডাকব বলো । আগে থেকে নাম শুনলেও গাছের তলে,ফোনে, পার্কে বা ঘরের ছাদে ছাদে কোন সাক্ষাত হয়নি। বিয়ের পর তারা অভিযানে নেমে পড়ে, একে অপরকে জয় করতে চায়। এ জয়ের একটা আলাদা শিহরণ আছে,শংকা আছে,জড়তা আছে,আগ্রহ আছে। কেননা ভিন্ন প্রকৃতির দু’টি হিয়ার মালিক তারা দুজন। স্বভাবও দু’রকমের। জীবনের আঁকা বাঁকা পথে ছন্দ মিলাতে হবে, পতন হলে জ্বালাময় অগ্নি গারদের অতিথী হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এ ভয় দু’জনকেই শংকিত করে তোলে। একে অপরকে জয় করার স্বার্থে স্বভাবগত এ্যাডজাষ্টমেন্টের জন্যেঅনেক কিছু ছাড় দিতে তৃপ্তি বোধ করে। এটাই হলো কন্ট্রাকট মেরিজের ষ্টাইল।
এ্যাডজাস্টমেন্ট কি ? এ্যাডজাস্টমেন্ট হলো,ভিন্ন প্রকৃতির দু’টি পরিবার থেকে তাদের আগমন। পরিবারের আচার ব্যবহার কৃষ্টি,কালচার,মান-মর্যাদা,শিক্ষা-দীক্ষা,বংশ মর্যদা,প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন। তাদের স্বভাবের বৈপরীত্য থাকাই স্বাভাবিক। এই বৈপরীত্বের আগা মাথা ছাট-কাট করে ভালবাসার আঠায় জোড়া দেয়া। তাহলে তারা কেউ হৃদয়বানী কেউ হৃদয়েশ্বরীর আসনে অধিষ্টিত হতে পারবে। তাদের অভিযান সাকসেসফুল । দু’টি অপরিচিত হৃদয়কে মজবুত বন্ধনে মহান আুল্লাহ এভাবেই আবদ্ধ করে দেন। এদেরকে সুখের পেছনে ছুটতে হয় না। সুখই এদের জীবনে সেধে এসে বাসা বাধে। আমাদের শ্লোগান হবে,জীবনে যদি সুখ চাও কন্ট্রাকট মেরেজ করে নাও। কি, তন্ময় হয়ে গেছ দেখছি সবাই। নি:শ্বাস পযর্ন্ত শোনা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে আশে পাশে তাকাচ্ছো,হৃদয়বাণী আর হৃদয়েশ্বরী বুঝি কাছেই হাজির। না,সে এখনও তোমার দৃষ্টিসীমার বাইরে তোমার হৃদয়ের অংকিত ছবি হয়ে দাড়িয়ে আছে। তবে শুধু এটুকুই বলতে পার,দাড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ওপারে। হবে হবে,এমন সুখই হবে। কিভাবে হবে তার জন্যে নিন্মের অভিজ্ঞতা বিধি গুলো আগামী দরবারে মুখস্ত করে এসো।
অভিজ্ঞতা বিধিঃ
এক ঃ আুল্লাহর নির্দ্ধারিত নিয়মে কন্ট্রাকট মেরেজ। আজ থেকে ফাঁদ পেতে শিকার ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
দুই ঃ পৃথিবীতে সকলের চেয়ে বড় যে বাপ-মা,তাদেরকে সাথে করে জীবন সাথী কোথায় আছে খোঁজ করে আনতে হবে।
(এ ক্ষেত্রে কোন আদর্শ প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে সাথী শপথের সার্টিফিকেটধারীদেরকে অগ্রাধীকার দেয়া যেতে পারে)।
তিন ঃ বিবাহ কর্ম সমাধা করার পর স্বভাব-চরিত্রের যে অংশটুকু অপরের কাছে বিরক্তিকর তা ছাট-কাট করে একে অপরের
সাথে এ্যাডজাষ্ট করার উদার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
চার ঃ হৃদয়ের পুঞ্জিভুত ভালবাসার খাঁচায় জীবন সাথীকে আবদ্ধ করে দুয়ার আটকে দিতে হবে। সংরক্ষিত এলাকায় আর
কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
পাঁচ ঃ দুঃখ-কষ্ট আনন্দ সবকিছুকেই ভাগাভাগি করে নিতে হবে। তবে দুঃখ কষ্টের ভাগ বেশী বহন করার উদার
মনমানসিকতা থাকতে হবে।
ছয় ঃ সকল কাজে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
সাত ঃ প্রকৃত ঘটনা না জেনে আস্থা হারানো বৈধ নয়। ঘটনা ঘটার কারণ ও পরিবেশ মুল্যায়ন আবশ্যক। ভুল হলে
সংশোধনের জন্য উভয় পক্ষ থেকে উদ্যোগ অগ্রে গ্রহণ বাঞ্ছনীয়।
আট ঃ অপরের স্ত্রী বা অপরের স্বামীর গুনগান,তুলনামুল আলোচনা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। মাঝে মাঝে বলতে হবে,তোমার মত এইরকম ভাল আর কারো মধ্যে আমি দেখিনাই। কি বলছ ? মিথ্যে অভিনয় ! তা হবে কেন ?
বলতে হবে এইরকম ভাল। হতে পারে কেউ এর থেকে একটু কম অথবা একটু বেশী ভাল। ঠিক এই রকমই হতে
পারে না। আুল্লাহর পৃথিবীতে খোঁজ করলে একই রকম সমান সমান দু’টি পাওয়া অসম্ভব। মিথ্যেও হলো না
ফায়দাও হাসিল হলো।
যারা বিবাহের অপেক্ষামান তালিকায়,তারা উপরোক্ত গবেষণালদ্ধ অভিজ্ঞতা গুলো স্মরণ রাখবে। আর যারা বিবাহত্তোর সীমানার মধ্যে অবস্থান করছ তাদের জন্যে তিন থেকে আট নং অভিজ্ঞতা গুলোর উপর প্রচেষ্টা অব্যহত রাখলে আুল্লাহর সাহায্য নিশ্চিত,অনির্বায।
আগামী দারবারের প্রসংগ ? একই । প্রসংগের কোন পরিবর্তন নেই। পৃথিবীতে বাবা আদম (আঃ)এবং মা হাওয়াকে আুল্লাহ সুবহানুওয়াতায়ালা বিবাহ কর্ম সমাধা করেই পাঠিয়েছিলেন। আজ পযর্ন্ত সে বিয়ে অব্যাহত আছে। যেদিন পৃথিবীতে বিবাহ কর্ম বন্ধ হবে আমরাও সেদিন প্রসংগ চেঞ্জ করব। আুল্লাহ হাফেজ।
এক সপ্তাহ পর দরবার আবার শুরু হলো। সকলকে শুভেচ্ছা। আজকে কিছু নতুন মুখ দেখেিত পাচ্ছি। আসতেই হবে। মধু যেখানে মৌ-মাছির গুন গুনানিও সেখানে। গতদিন ৯৮.৭৩ শতাংশের বিবাহ কর্ম সম্পাদনের পর বিবাহ উত্তর যন্ত্রনার উৎপত্তি এবং তার পরিণতি সম্পর্কে দরবারের এক গবেষনার ফল তোমাদের উপহার দিয়েছি। তোমরা নিশ্চয়ই একটা পাকা-পোক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছ। অভিজ্ঞতা এখন থেকেই কাজে লাগাবে। অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। এটাই হবে তোমাদের জীবন সুন্দর করার একমাত্র পথ। সচেতন থেকো। সচেতন না হলে জীবন চলার পথে ফুটন্ত গোলাপ বাগানের প্রস্ফুটিত গোলাপের দিকে কে না তাকাতে চায় ? তাই বলে ইচ্ছে হলেই তো হাত বাড়িয়ে একটা ছিড়ে নিয়ে নাকের কাছে ধরা যাবে না। এটা হবে অবৈধ হস্ত-প্রসারণ,সম্পূর্ন নিষিদ্ধ, সম্পূর্ন হারাম। অবশ্য চুক্তি করে গ্রহন করাতে বাধা নেই। বিবাহ জীবনটাও তাই। দাঁড়াও এখনই নয়। চুক্তি করার সময় এখনও হয়নি।
আগে ভাগেই চুক্তি করার জন্যে এত পাগল কেন ? পাগল তো হয় বুড়োরা। বাংলা বাগধারা মুখস্ত নেই ? বিয়ে পাগলা বুড়ো,মনে পড়ে ? যুবক-যুবতীরা পাগল হলেও বিয়ের কথা আকার ইংগিতে বলে। চাষী তার ছেলেকে নিয়ে পাট নিড়াচ্ছে। ছেলে বলছে,বাজান পাটেতো এবার অনেক টাকা হবি। বাপ বলল,কষ্ট যখন করতিছি তাতো হবিই। তাহলি তো এবার আমাগের বাড়ী বিয়ের ধুম পড়ে যাবেনে। কার বিয়ে রে ? ধরেন,ক্ষেতের থেকেই। কথার ধরন কত সুন্দর, কত পোলাইট। ওরা বিয়ের আগে যন্ত্রনার ফাঁদ পাতে না। বাপ যেখানে সম্মন্দ করায় সেখানেই বসে যায়। এমন সুন্দরীর বায়না ধরে না,যা খুজেই মেলানো যায় না। বিরক্ত হয়ে বাপ মনে করে,ঢাকায় এ রকম সুন্দরী তৈরীর কারখানা আছে কি না ? থাকলে সেখানেই যেত। যুবতীদের ইংগিত হলো,আব্বু আমি তোমার ছেড়ে কোথাও যাব না। কেন রে শশুর বাড়ীতে যে যেতে হবে? কত সুন্দর ভাবে বাপের মনে নিজের শশুর বাড়ীর কথা মনে করিয়ে দেয়। তাগিদ দিয়ে বলে,আব্বু ওকথা তুমি মুখেও এনো না। আব্বু তখন বুঝতে পারে মেয়েদের ছি মানে জ্বী,না মানে হাঁ।
একটা ঘটনা শুনাতে চাচ্ছি। নিজের ঘটনা বলে শরম লাগছে। শরম লাগলেও বলতে হবে। অভিজ্ঞতা গোপন করা ঠিক না। কেউ অভিজ্ঞতা পেল না আর অভিজ্ঞতার অভাবে যদি তার ক্ষতি হয় আর সে যদি আুল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে ? বিষয়টি হলো,আমার বাপ তো বিয়ের জন্যে পাগল। না,না তার জন্যে না,আমাকে বিয়ে করাবে। অনেক দিন ধরে পেছনে লেগে আছে। কিন্ত ক্লিয়ারেন্স পাচ্ছে না। কেবল বি,এ পাশে উত্তীর্ন হয়েছি। চাকরী ক্ষুদ্র। বাধ্য হয়ে দেরী করতে হবে। নাÑরাজি দরখাস্ত পেশ করে দিলাম। দরখাস্ত পেশ করার কারণে পরীক্ষা চালালো আমি যন্ত্রনার ফাঁদ পেতে রেখেছি কি না। ফাঁদ পাতবো কি করে ? কোন কথা বলেছি নাকি কারো সাথে কোন দিন ? কো-এডুকেশনেই ছিলাম,স্কুল,কলেজ,ভার্সিটি সব জায়গাতেই। কত চোখা চোখী হয়েছে কিন্তু কথা বলিনি। মুখে তালা মারা যায়, চোখে তো মারা যায় না। চোখের উপর নীচের পাতায় যদি আংট্ াকড়া থাকতো তাহলে তালা মারা সম্ভব ছিল। কথা না বলতে বলতে এমন জং ধরে গিয়েছিল মনে হচ্ছিল,আসল সময় মুখ দিয়ে হয়ত কথা বের হবে না । শ্রীকান্ত যারা পড়েছো তার একটা ঘটনাংশ। বার্মা(এখন মায়ানমার) যাওয়ার পথে (সম্ভবত তৃতীয় পর্বে) জাহাজে দুই হিন্দু মহিলার একজনের স্বামী ছিল মুসলমান। অন্য মহিলা আৎকে উঠে প্রশ্ন করল,ছি ছি,মুসলমান ? মুসলমান হলে হবে কি দিদি, পচিশ বছর ঘর করনু কিন্তু মিন্সির হেসেল মাড়াতে দেই নি। অর্থাৎ সে যাত মান ঠিক রেখেছে। আমিও কিন্তু তাই। ১৬ বছর এক লাগাড়ে এক সাথে লেখাপড়া করনু, কথা বলা তো দুরে থাক কারো ছায়া পযর্ন্ত মাড়াইনি। ঘটনাটা গিনেজ বুকে রের্কড করার মত নয় কি ? নিজের বলে বলছিনা। একেই বলে ষ্টিল চরিত্র।
বেশী দিন আর নিশ্চিন্তে থাকতে পারলাম কই। বাপ না রাজি আবেদন খারিজ করে দিলেন। বললেন তৈরী হও,পাত্রী দেখতে যেতে হবে। বললাম আপনার পছন্দ হলেই হবে,আমার যাওয়ার দরকার নেই। না,যেতে হবে, আমার পছন্দ হলে কবুল কলমা একবারে সমাধা করেই আসব। দেখেছো, আই হ্যাভ নো রাইট টু সে।
যাই হোক, বেশী না হলেও মনের মধ্যে একটু একটু ফুর্তি শুরু হয়ে গেল। পাত্রী চোখে দেখা জায়েজ হলেও এক নজরের বেশীক্ষণ চোখ রাখতে পারিনি। যা চোখে পড়লো,তা লেন্সের মধ্যে একটা ঝাপসা ছুরাত আটকে গেল। দ্বিতীয় বার আর একটা ¯œ্যাপ নিয়ে ঝাপসা পরিস্কার করার সাহস হলো না। পার্শ্ব থেকে একজন জিজ্ঞেস করল ভাল করে দেখেছ ? মাথা কোনদিকে কতবার নাড়া নাড়ি করেছিলাম তার সত্যতা এখন আর যাচাই করা সম্ভব না। অন্যদিক দিয়ে বেঁচে গেলাম। পাত্রী পছন্দ হয়েছে কি না,কন্যা পক্ষের এমন জিজ্ঞাসায় বাপ সরাসরি বলে দিলেন কলমা কবুল হবেÑএবার বোঝ,আমি কেউ না। আমি শুধু কবুল বলার মালিক। শরীয়ত অনুমতি দিলে সেট্ওা বোধ হয় আমার জন্যে বরাদ্দ না রেখে নিজেই পালন করে ফেলতেন কিনা আমার সন্দেহ হচ্ছিল।
প্রতিবেশী এক মহিলা মন্তব্য করেছিল,কাকের মুখে কমলা। বলার কারণও ছিল। অনেকে বলে,বংশের অন্যান্য ভাইদের মধ্যে আমি নাকি রাজপুত্রের মত। রাজপুত্র না হলেও রাজবাড়ীর কাছাকাছি জন্ম গ্রহন করার মত সুরাত আুল্লাহপাক দিয়েছেন । তাই বোধ হয় মহিলারা মন্তুব্য করে ফেলেছে কাকের মুখে কমলা। তাদেরই বা দোষ কি ? আবার আমার বাপের পছন্দ করার দোষই বা কি,ওর জন্মদাতা বাপের দোষই বা কি ? পরিবর্তে আমার মহান রব যে নেয়ামত আমার ভাগ্যে বরাদ্দ রেখেছিলেন তা আমার জীবনের এক পরম পাওয়া। আমরা এখন ৯৩.৪১ শতাংশের সদস্য ভুক্ত হয়ে কালাতিপাত করছি। অনেকে এ নিয়ে হিংসেও করে থাকে। আগেই উুেল্লখ করেছি বিয়ের মধ্যে হিংসাও আছে।
এবার হবে ৯৩.৪১ শতাংশের সুখময় জীবনের স্বাদ আস্বাদনের কারণ নির্ণয়এবং সে সম্পর্কে তার গবেষনালদ্ধ অভিজ্ঞতার বয়ান। যে সকল যুবক প্রেমের ফাঁদে আটক করে ঘরে তোলেনা বা ঐ পথ ধরে যে যুবতীরা কারো গৃহে প্রবেশ করে না তাদের বিবাহকে কন্ট্রাকট মেরেজ বলে। সংগাটা এখনই মুখস্ত করে ফেল । এ বিয়ের ধারা গুলো হোল,কেউ কাউকে হয়ত কোন দিন দেখেনি, পরিচয় নেই, কারো নামই কেউ জানে না। ফলে প্রথম পরিচয়ে জিজ্ঞেস করতে হয়,কি নামে তোমায় আমি ডাকব বলো । আগে থেকে নাম শুনলেও গাছের তলে,ফোনে, পার্কে বা ঘরের ছাদে ছাদে কোন সাক্ষাত হয়নি। বিয়ের পর তারা অভিযানে নেমে পড়ে, একে অপরকে জয় করতে চায়। এ জয়ের একটা আলাদা শিহরণ আছে,শংকা আছে,জড়তা আছে,আগ্রহ আছে। কেননা ভিন্ন প্রকৃতির দু’টি হিয়ার মালিক তারা দুজন। স্বভাবও দু’রকমের। জীবনের আঁকা বাঁকা পথে ছন্দ মিলাতে হবে, পতন হলে জ্বালাময় অগ্নি গারদের অতিথী হওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এ ভয় দু’জনকেই শংকিত করে তোলে। একে অপরকে জয় করার স্বার্থে স্বভাবগত এ্যাডজাষ্টমেন্টের জন্যেঅনেক কিছু ছাড় দিতে তৃপ্তি বোধ করে। এটাই হলো কন্ট্রাকট মেরিজের ষ্টাইল।
এ্যাডজাস্টমেন্ট কি ? এ্যাডজাস্টমেন্ট হলো,ভিন্ন প্রকৃতির দু’টি পরিবার থেকে তাদের আগমন। পরিবারের আচার ব্যবহার কৃষ্টি,কালচার,মান-মর্যাদা,শিক্ষা-দীক্ষা,বংশ মর্যদা,প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন। তাদের স্বভাবের বৈপরীত্য থাকাই স্বাভাবিক। এই বৈপরীত্বের আগা মাথা ছাট-কাট করে ভালবাসার আঠায় জোড়া দেয়া। তাহলে তারা কেউ হৃদয়বানী কেউ হৃদয়েশ্বরীর আসনে অধিষ্টিত হতে পারবে। তাদের অভিযান সাকসেসফুল । দু’টি অপরিচিত হৃদয়কে মজবুত বন্ধনে মহান আুল্লাহ এভাবেই আবদ্ধ করে দেন। এদেরকে সুখের পেছনে ছুটতে হয় না। সুখই এদের জীবনে সেধে এসে বাসা বাধে। আমাদের শ্লোগান হবে,জীবনে যদি সুখ চাও কন্ট্রাকট মেরেজ করে নাও। কি, তন্ময় হয়ে গেছ দেখছি সবাই। নি:শ্বাস পযর্ন্ত শোনা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে আশে পাশে তাকাচ্ছো,হৃদয়বাণী আর হৃদয়েশ্বরী বুঝি কাছেই হাজির। না,সে এখনও তোমার দৃষ্টিসীমার বাইরে তোমার হৃদয়ের অংকিত ছবি হয়ে দাড়িয়ে আছে। তবে শুধু এটুকুই বলতে পার,দাড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ওপারে। হবে হবে,এমন সুখই হবে। কিভাবে হবে তার জন্যে নিন্মের অভিজ্ঞতা বিধি গুলো আগামী দরবারে মুখস্ত করে এসো।
অভিজ্ঞতা বিধিঃ
এক ঃ আুল্লাহর নির্দ্ধারিত নিয়মে কন্ট্রাকট মেরেজ। আজ থেকে ফাঁদ পেতে শিকার ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
দুই ঃ পৃথিবীতে সকলের চেয়ে বড় যে বাপ-মা,তাদেরকে সাথে করে জীবন সাথী কোথায় আছে খোঁজ করে আনতে হবে।
(এ ক্ষেত্রে কোন আদর্শ প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে সাথী শপথের সার্টিফিকেটধারীদেরকে অগ্রাধীকার দেয়া যেতে পারে)।
তিন ঃ বিবাহ কর্ম সমাধা করার পর স্বভাব-চরিত্রের যে অংশটুকু অপরের কাছে বিরক্তিকর তা ছাট-কাট করে একে অপরের
সাথে এ্যাডজাষ্ট করার উদার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
চার ঃ হৃদয়ের পুঞ্জিভুত ভালবাসার খাঁচায় জীবন সাথীকে আবদ্ধ করে দুয়ার আটকে দিতে হবে। সংরক্ষিত এলাকায় আর
কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
পাঁচ ঃ দুঃখ-কষ্ট আনন্দ সবকিছুকেই ভাগাভাগি করে নিতে হবে। তবে দুঃখ কষ্টের ভাগ বেশী বহন করার উদার
মনমানসিকতা থাকতে হবে।
ছয় ঃ সকল কাজে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
সাত ঃ প্রকৃত ঘটনা না জেনে আস্থা হারানো বৈধ নয়। ঘটনা ঘটার কারণ ও পরিবেশ মুল্যায়ন আবশ্যক। ভুল হলে
সংশোধনের জন্য উভয় পক্ষ থেকে উদ্যোগ অগ্রে গ্রহণ বাঞ্ছনীয়।
আট ঃ অপরের স্ত্রী বা অপরের স্বামীর গুনগান,তুলনামুল আলোচনা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। মাঝে মাঝে বলতে হবে,তোমার মত এইরকম ভাল আর কারো মধ্যে আমি দেখিনাই। কি বলছ ? মিথ্যে অভিনয় ! তা হবে কেন ?
বলতে হবে এইরকম ভাল। হতে পারে কেউ এর থেকে একটু কম অথবা একটু বেশী ভাল। ঠিক এই রকমই হতে
পারে না। আুল্লাহর পৃথিবীতে খোঁজ করলে একই রকম সমান সমান দু’টি পাওয়া অসম্ভব। মিথ্যেও হলো না
ফায়দাও হাসিল হলো।
যারা বিবাহের অপেক্ষামান তালিকায়,তারা উপরোক্ত গবেষণালদ্ধ অভিজ্ঞতা গুলো স্মরণ রাখবে। আর যারা বিবাহত্তোর সীমানার মধ্যে অবস্থান করছ তাদের জন্যে তিন থেকে আট নং অভিজ্ঞতা গুলোর উপর প্রচেষ্টা অব্যহত রাখলে আুল্লাহর সাহায্য নিশ্চিত,অনির্বায।
আগামী দারবারের প্রসংগ ? একই । প্রসংগের কোন পরিবর্তন নেই। পৃথিবীতে বাবা আদম (আঃ)এবং মা হাওয়াকে আুল্লাহ সুবহানুওয়াতায়ালা বিবাহ কর্ম সমাধা করেই পাঠিয়েছিলেন। আজ পযর্ন্ত সে বিয়ে অব্যাহত আছে। যেদিন পৃথিবীতে বিবাহ কর্ম বন্ধ হবে আমরাও সেদিন প্রসংগ চেঞ্জ করব। আুল্লাহ হাফেজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন