
মাহমুদ শরীফ‘জনগণের প্রত্যাশা‘ নিয়ে কিছু লেখার আগে প্রথমেই পরিষ্কার হওয়া দরকার জনগণ কে বা কারা ? বাংলা অভিধান অনুযায়ী বলা যায়, জনগণ বলতে এক কথায় বুঝায় ‘সাধারণ মানুষজন‘। আর প্রত্যাশা বলতে ‘কামনা, চাওয়া, আশা করা ইত্যাদী। তাহলে ‘জনগণের প্রত্যাশা‘ বলতে এক বাক্যে বলতে পারি- সাধারণ মানুষের কামনা বা চাওয়া। এই সাধারণ মানুষ বা জনগণকে আবার বহু ভাবে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ধনী-গরীব, শিতি-অশিতি, আস্তিক-নাস্তিক সর্বোপরি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এই সাধারণ মানুষ বা জনগণকে নিয়েই বর্তমানে বাংলাদেশে বেশী আলোচনা চলছে। সরকারি কিংবা বিরোধী দল সবাই এই সাধারণ মানুষ বা জনগণকে মতা বা আন্দোলনের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং করছে। সুযোগ মত গোচাচ্ছে আখের, আঙ্গুল ফুলে হচ্ছে কলা গাছ। নিচুতলা হচ্ছে উঁচু, খসখসে শরীর মেদযুক্ত। যার প্রমাণ আমরা ভোটার বিহীন গত ৫ ফেব্র“য়ারীর দশম সংসদ বিতর্কিত নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় দেখতে পেয়েছি। দুষ্টু চরিত্রহীন রাজনৈতিক সুযোগ সন্ধানী নেতা জনগনকে ধোকা দিয়ে নির্বাচন নামক পদ্ধতিতে অঢেল টাকা বিনিয়োগ করে, নির্বাচিত হয়ে বেমালুম ভুলে যায় এই সাধারণ মানুষ বা জনগণকে। তবে আদর্শবান নেতা যে নেই তা বলছিনা, থাকলেও তারা আদর্শহীনদের তুলনায় হয়তো শতকরা হিসেবেই আসবেনা।
‘জনগণের প্রত্যাশা‘ নিয়ে লেখার বিষয়টি মনে হয় ভিন্ন দিকে চলে যাচ্ছে। মূল কথায় ফিরে আসা যাক। সাধারণ মানুষ বা জনগণ কি কামনা করে সেটার প্রতিফলন বাংলাদেশের প্রোপটে বর্তমানে নেই বললেই মিথ্যা হবেনা বৈকি! কেননা, গত ৫ ফেব্র“য়ারীর দশম সংসদ বিতর্কিত নির্বাচনে যে পরিমান ভোট পড়েছে বা ভোটার উপস্থিতি ছিল তার সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। বে-সরকারি ভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে শতকরা হিসেবে সবচে‘ কম ভোটার উপস্থিতি হলেও নির্বাচন কমিশন অ-নে-ক ভেবে চিন্তে টেনে ফুলিয়ে ৪০ ভাগ ভোটারের উপস্থিতি দেখিয়ে সরকারের কাছে বাহবা কুড়িয়েছে! তা ভালো, জনগন আসলটা ঠিকই বুঝে আছে। সময় মত ঝোপ বুঝে কোপ দেবে। কারণ উনাদের ভাষায়- জনগণই মতার উৎস।
গত ৫ ফেব্র“য়ারীর দশম সংসদ বিতর্কিত নির্বাচনে সাধারণ মানুষ বা জনগণ নীরবেই হলুদ কার্ড কোথাও কোথাও লাল কার্ড দন্ত বিকশিত করে প্রদর্শন করেছে। হলুদ কার্ড পেয়েও যারা সতর্ক হয়না, লাল কার্ড পেয়েও যারা লজ্জিত হয়ে মাঠ ত্যাগ করেনা, তাদের মনে চোখে লজ্জার ভূষন তাহলে কি আছে? যদি থাকতো তাহলে এর প্রতিফলন সাধারণ মানুষ বা জনগণ এতদিন তা অবশ্যই দেখতে পেত বৈকি। মেনে নিলাম তাদের ৪০ ভাগ ভোটারের সফল উপস্থিতি । দেশের মোট ভোটার নিশ্চয় ৪০ ভাগ নয়, শত ভাগের ৬০ ভাগ ভোটারের অনুপস্থিতি জানিয়ে দিয়েছে - এই নির্বাচন, এই সরকারকে তারা চায়না। কিন্তু এমন ব্যাপার হলে তাতে কী? ৪০ ভাগ ভোটারের উপর ভর করা দল ৬০ ভাগকে ভোটারই মনে করে না। এই মনে না করা বা এর অবমূল্যায়নের পরিনতি কি ভয়াবহ হতে পারে তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে। অতীতও বলে গেছে। সাধারণ মানুষ বা জনগণের প্রত্যাশার প্রতিবিম্ব একদিন বিষ্ফোরণ ঘটবেই, আর সেই বিষ্ফোরণে কি ভয়াবহতার সৃষ্টি হবে, সেটা সহজেই অনুমান করা কঠিন। সাধারণ মানুষ বা জনগণ বিচিত্র শ্রেনি পেশা থেকে এসেছে। এদের একজন সাধারণ কৃষক বা চাষা, সে চায় তার কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য। ফসলগুলো যেন তার গলার কাঁটা না হয়, পঁচে নষ্ট না হয়। ফসলের টাকা দিয়ে সে চায়- মেয়ের বিয়ে দিতে, বৃদ্ধ পিতা-মাতার চিকিৎসা করাতে, ছেলের শিা সচল রাখতে। সাধারণ মানুষ বা জনগণের মধ্যে একজন ুদ্র ব্যাবসায়ী, সে প্রত্যাশা করেÑ দোকান খোলা থাকুক, খরিদ্দার আসুক। বেচা-কেনা হোক। জীবন জীবিকায় যেন কোন ব্যাঘাত না হয়। তদ্রুপ সাধারণ মানুষ বা জনগণের একজন যানবাহনের চালক, তার প্রত্যাশা- গাড়ীর চাকা চলুক নিশ্চিন্তে। সংসার চলুক ভাবনাহীন। একজন শিল্পপতির সাধারণ মানুষ বা জনগণ হিসেবে কামনা- কারখানায় উৎপাদন সচল থাক, কাঁচামাল আমদানী আর উৎপাদিত পণ্য রপ্তানী হোক নির্বিঘেœ। শ্রমিক মালিক সম্পর্ক হোক ভালবাসায় অটুট। অর্থনৈতিক বিপর্যয় তার কোন ভাবেই কাম্য নয়।
একই ভাবে শ্রমিক, তাঁতী, মজুর, শিক, সাংবাদিক, ছাত্র, হকার, চিকিৎসক, কামার-কুমোর, জেলেসহ সকল সাধারণ মানুষ বা জনগণ সব সময় নিজ নিজ কর্মেেত্র থাকতে চায় কর্মশীল। সবাই চায় আগামীর দিনগুলো সাচ্ছন্দে ভাবনাহীন ভাবে অতিবাহিত করতে।
কিন্তু সেটা বর্তমান প্রোপটে হচ্ছেনা, কেন হচ্ছেনা? এর উত্তর সরকারসহ সাধারণ মানুষ বা জনগণের সবারই জানা। তবুও বলছি- পরিস্থিতি বা প্রোপটের জন্য শতভাগ দায়ী বর্তমান সরকার। কেননা তারা ৬০ ভাগ জনগণকে উপো করে নিজেরা বিতর্কিত ৪০ ভাগ নিয়ে জোর করেই মতায় থাকতে চায়। আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে বলা যায়Ñ এই ৪০ ভাগের মধ্যেও কি সবই তাদের? না, এর মধ্যে শুধু নৌকার ভাগই কতটুকু আছে সেটাও দেখার বিষয়। হতে পারে ২০ ভাগ বা ১৮/১৯ভাগ। ৬০ ভাগ জনতা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করবেই এটাই স্বাভাবিক। আর সেই স্বাভাবিক আন্দোলন করতে বাধা দেওয়ার হেতু কি? আবার সেই আন্দোলনকে নাশকতা বা অন্য কোন নামে অবিহিত করে দমন করারই হেতু কি? এর জবাব জনগণ ঠিকই জানে। পুলিশ-র্যাবের গুলি ফুরিয়ে যাবে, জনগণ এবং তাদের প্রত্যাশা ফুরাবেনা। ৪০ভাগ নিয়ে স্বস্তির হেঁকুর তুলে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে মতা পাকা-পোক্ত করা হচ্ছে। এরই প্রাক্কালে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিজেরা চালিয়ে ৬০ ভাগ জনতার উপর চাপানোর চেষ্টা যে সকলের চোখকে ভিন্নদিকে সরানো, সেটা আমজনতার কাছে দিবালোকের মত পরিষ্কার হয়ে গেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরের সময় বলেছিলেন, বাংলাদেশে ২৫ভাগ জনগণ ভারত বিদ্বেষী, এদের অধিকাংশই জামায়াতের সমর্থক। মনমোহন বাবু যে হিসেবেই ২৫ভাগের কথা বলুক না কেন ধরে নিলাম হিসেব টি ঠিক আছে। ২৫ভাগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি নিশ্চয় বাঁকী ৭৫ভাগকে শাসন করবেনা এটাই সঠিক, ঠিক তেমনি ২০ বা তার কম ভাগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাহলে কি করে বাংলাদেশ শাসন করতে পারে? এই প্রশ্নের জবাব কি মনমোহন বাবু কিংবা তাদের পা চাটা গোলামেরা দেবেন? শেষে বলি জনগণের প্রত্যাশা কি সেটা বাস্তবায়নে আর সময় নষ্ট করবেন না। সাধারণ মানুষ বা সংখ্যা গরিষ্ট জনগণ কি চায়, এখনই তাদের ভাষা বুঝুন, পদত্যাগ করুন, সকল দল ও জনগণের মতামতের প্রতি গুরুত্ব দিন, আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও মতা হস্তান্তরের আয়োজন করুন। হত্যা, গুম, গ্রেফতার, ফাঁসি দিয়ে টিকে থাকা যাবেনা, যায়নি। সাধারণ মানুষ বা জনগণের যে প্রত্যাশা তার প্রতিফলন ঘটবেই। ৬০ভাগ জনগণ আগামীতে ৬০ভাগ থাকবেনা, শতকরা হার বাড়তেই থাকবে অব্যহত। দিন যাবে ভাগ বাড়বে। এভাগের আন্দোলনও বাড়বে ভিন্ন গতিতে। সুতরাং শুভ কাজে দেরি করতে নেই!! একজন সাধারণ জন (জনগণের একজন) হিসেবে এটাই প্রত্যাশা।

দিগন্ত ডেস্ক: বিজ্ঞানের সহায়তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এবার নাতনিকে জন্ম দিতে চলেছেন এক নানি। টেস্ট টিউব প্রযুক্তির সহায়তায় নিজের মেয়ের ডিম্বাণু গর্ভে ধারণ করেছিলেন ৫৮ বছর বয়সের ওই নারী। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসে তার মেয়ের সন্তান প্রসব করার কথা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা জুলিয়া নাভারোর মেয়ে লরেনা ম্যাককিনন (৩২) মা হতে পারছিলেন না। চেষ্টা করেছিলেন বেশ কয়েকবারই। কিন্তু প্রতিবারই তাঁর গর্ভপাত ঘটে। এরপর মেয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসেন মা নাভারো। তিনি ম্যাককিননের নিষিক্ত ডিম্ব নিজের গর্ভে প্রতিস্থাপনে সম্মত হন। ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে মেয়ের সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন মা নাভারো। এ সম্পর্কে 'ইউটাহর দ্য সল্ট লেক ট্রিবিউন' পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্য হিসেবে আমাদের একে অন্যকে সাহায্য করা উচিত।’
নাভারোর জন্য বিষয়টি ছিলো সত্যিই দূরূহ। কেননা তার তার ঋতুস্রাব বন্ধ হয়েছিলো ১২ বছর আগে। তাই শারীরিক সমতা যাচাইয়ে নানা পরীার সম্মুখীন হতে হয়। পরীা শেষে চিকিৎসকেরা জানান, তার দেহে নিষিক্ত ডিম্ব প্রতিস্থাপনে সাফল্যের সম্ভাবনা ৪৫ শতাংশ। এরপর শুরু হয় শরীরে হরমোন ঢুকানোর কাজ। তিন মাস ধরে প্রতিদিনই তার শরীরে হরমোন পুশ করা হতো। এভাবেই ডিম্বাণু প্রতিস্থাপনে প্রস্তুত হয় নাভারোর শরীর।
এরপর চলে আইনী প্রস্তুতি। আরো তিন মাস ধরে মা ও মেয়ের মধ্যে সলা পরামর্শ শেষে দুজন এক চুক্তি পত্রে স্বার করেন। ম্যাককিনন বলেন, ‘নিজের মায়ের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি করার বিষয়টি সত্যিই অদ্ভুত একটা ব্যাপার।’
এদিকে শ্বাশুড়ির গর্ভে নিজ সন্তানের বেড়ে ওঠা নিয়ে দারুন উত্তেজিত ম্যাকের স্বামী মিকাহ ম্যককিনন। তিনি বলেন,‘ আমার কল্পনার চেয়েও ভালোভাবে সবকিছু এগুচ্ছে। আমি এখন দারুন সুখী।’ তবে মাত্র একটি কন্যা সন্তানের বাবা মা হয়েই থেমে থাকতে চান না ম্যাককিনন দম্পতি। আরো অনেক ছেলে মেয়ে চাই তাদের। এতে তাদের তেমন একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ লরেনা ম্যাককিননের ভাষায় ‘পরীাগারের কাচের বাক্সে এখনো আমাদের পাঁচটি ভ্রণ রয়েছে।’
চিকিৎসকরা বলেছিলেন, নাভারোনের গর্ভধারণের সম্ভাবনা মাত্র ৪৫ ভাগ। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রথম বারের প্রচেষ্টাতেই গর্ভবতী হন তিনি। এরপর সবকিছু স্বাভাবিক গতিতেই চলতে থাকে। কোনোরকম অসুস্থতা বা অস্বস্তিকর কিছুই অনুভব করছিলেন না নাভানোন। তখন মায়ের দেখভাল করতেন মেয়ে ম্যাককিনন। সারণই মাকে উপদেশ দিতেন তিনি। ‘মা বেশি পানি খাও, আর বাদাম খেয়ো না। তোমার পায়ে পানি এসে যাবে।’ মেয়ের পাকামোতে মাঝে মধ্যে বিরক্ত হয়ে যেতেন নাভারোন। তখন মেয়েকে বলতেন,‘ ভুলে যেয়ো না বাপু, তোমাদের দু বোনকে কিন্তু আমিই জন্ম দিয়েছি। কাজেই কি করা উচিত তা আমি ভালোই বুঝি।’
কিডনীতে পাথর হয় কেন?
;">

আমরা জানি, ভিটামিন’এ-এর অভাবে অন্ধত্ব, ডায়রিয়া প্রভৃতি রোগ হয়ে থাকে। মূলত কিডনীতে পাথর হবার কারণও ভিটামিন ‘এ’-এর অভাব। ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে শরীরের বিভিন্ন অংশের কোষগুলো ঝরতে শুরু করে। যার ফলে ডায়রিয়া, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ দেখা দেয় এবং ত্বকের সৌন্দর্য হ্রাস পায়। তখন ঝরে যাওয়া কোষগুলো কিডনীর নিঃসরণ অংশে জমতে শুরু করে। ধীরে ধীরে য়ে পড়া এই কোষগুলোর উপরিভাগে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের আস্তরণ পড়ে। ক্রমান্বয়ে তা পরিণত হয় পাথরে।
এজন্য আমাদের পূর্ব থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। খাওয়া প্রয়োজন ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ খাবার। সামুদ্রিক মাছের তেল, গাজর, পাকা ফল, ছোট মাছ ও সবুজ শাক-সবজি প্রভৃতিতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। তাছাড়া অত্যাধিক পরিমাণে পানি পান করা অত্যাবশ্যক।
কিডনি অকেজো হলে বুঝবেন কিভাবে?
আমাদের দু’টি কিডনি দেখতে সীম আকৃতির, প্রায় হাতের মুষ্টির সমান। এ দু’টোর অবস্থান পিঠের প্রায় মধ্যভাগে, পঞ্জরাস্থির নিচে। এগুলো রক্ত পরিষ্কার করে। এছাড়াও কিডনি প্রয়োজনীয় যৌগ রেখে দিয়ে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল পদার্থ দেহ থেকে বের করে দেয়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ ঠিক রাখতে ভূমিকা রাখে এটি।
কিডনি প্রতি ৩০ মিনিটে একবার দেহের রক্ত পরিষ্কার করে। ঠিকমত বর্জ্য অপসারণ করতে না পারলে কিডনির ব্যর্থতা ঘটে। ফলে দেহের মধ্যে বর্জ্য ও বাড়তি তরল জমতে থাকে। রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসক কিডনির ব্যর্থতা শনাক্ত করতে পারেন।
সহসাই ঘটতে পারে এ কিডনি ব্যর্থতা। প্রবল সংক্রমণ, ওষুধ কিংবা অন্যান্য রাসায়নিক কনসেপ্টের কারণে এরকম ঘটতে পারে। অভ্যন্তরীণ কারণের সফল চিকিৎসা হলে কিডনি পুরোপুরি ভাল হয়। পুরনো কিডনি ব্যর্থতা দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে। এর ফলে ওজন কমে যাওয়া, রক্তশূন্যতা, বমনেচ্ছা, বমি, কান্তি, মাথাব্যথা, বুদ্ধিবৃত্তির লোপ, পেশীতে ব্যথা ও খিঁচুনি, ত্বকের রং হলদেটে বা বাদামি হয়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক চুলকানি, ঘুমে ব্যঘাত ইত্যাদি ঘটে। শেষ পর্যায়ের কিডনি ব্যর্থতার ফলে রক্তশূন্যতা, উচ্চ রক্তচাপ, হাড়ে সমস্যা, হৃদ ব্যর্থতা, মানসিক বিপর্যয় ইত্যাদি ঘটে।
কিডনির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে ডায়ালাইসিস করতে হয়। হেমোডায়ালাইসিস পদ্ধতিতে একটি যন্ত্রের সাহায্যে রক্ত প্রেরিত হয়। এই যন্ত্র বর্জ্য পরিচ্ছন্ন করে এবং নির্মল রক্ত দেহে ফেরত পাঠায়। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস পদ্ধতিতে ডায়ালাইসেট নামক তরল পেটে প্রেরিত হয়। এটি রক্ত থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে দেহের বাইরে পাঠায়।
প্রস্রাবে ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হলে, বারবার প্রস্রাবের বেগ হলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। এ ছাড়া প্রস্রাব কালো হলে, জ্বর কিংবা শৈত্যের অনুভূতি হলে, পিঠে কিংবা দেহের উভয় পার্শ্বে পঞ্জরাস্থির নিচে ব্যথা হলে, কিডনির কোন সমস্যা হয়েছে কিনা – সে ব্যাপারে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সুচিকিৎসা হলে অনেক ক্ষেত্রে কিডনির রোগ নিবারিত হতে পারে।
মৌমাছির অজানা কথা

মৌমাছি সত্যিই এক আশ্চর্য প্রাণী। এরা নিজেরাই বাড়ি তৈরি করে। এবং সেটাকে রীতিমত প্রাসাদই বলা যায়। এই প্রাসাদের কিন্তু একটা নাম আছে। একে বলে মৌচাক (ইবব ঐরাব)। মৌমাছিরা এটি তৈরি করে শীত বা অত্যধিক গরম থেকে নিজেদের বাঁচাতে, খাবার জমা রাখতে এবং থাকার জন্য স্থায়ী আশ্রয় হিসেবে। এক একটি মৌচাকে প্রায় ২০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ পর্যন্ত মৌমাছি থাকে। আর তোমরা সবাই তো জানোই এরা খুবই পরিশ্রমী, পরোপকারী ও সামাজিক প্রাণী।
পৃথিবীতে প্রায় ২০,০০০ প্রজাতির মৌমাছি আছে। এদের কেউ একা থাকে আবার কেউ বা থাকে দলবদ্ধভাবে। কেউ প্রচুর মধু জমা করে আবার কেউ একেবারেই করে না। কেউ বা উদ্দাম, পোষ না মানা, ঘুরে বেড়ায় বনে-বাদাড়ে। আবার কেউ কেউ থাকে মানুষের পোষ মেনে। কী অবাক কাণ্ড, তাই না? মৌমাছি আবার পোষ মানবে কিভাবে? কিছু কিছু প্রজাতি কিন্তু আছে, যাদেরকে মানুষ পোষ মানাতে পেরেছে। আরা এই পোষ মানা মৌমাছিদেরকে নিয়েই মৌচাষীরা তৈরি করে মৌ-খামার। বাজারের বেশিরভাগ মধুই কিন্তু আসে এসব খামার থেকে।
অবাক ব্যাপার হচ্ছে এদের মধ্যেও মানুষের মতো শ্রেণীবিভাগ আছে। আছে এক এক শ্রেণীর এক এক ধরনের কাজ।
মৌমাছিদের প্রধানত তিনটি শ্রেণী আছে- রাণী মৌমাছি, রাজা মৌমাছি এবং র্কর্মী মৌমাছি। একটি মৌচাকে এতোগুলো মৌমাছির মধ্যে রাণী থাকে কেবলমাত্র একটি। আর রাজা! তোমরা তো জানো যে একটি দেশে কেবল একজনই রাজা থাকেন। কিন্তু মৌমাছিদের রাজা থাকে কয়েকশো, আর বাকিরা সব র্কর্মী। অবাক হচ্ছো তোমরা? বন্ধুরা, ওদের সমাজটাই যে এ রকমের।
রাণী একজন হলেও সেই কিন্তু মৌচাকের র্সর্বময় র্কর্ত্রী। সবাই তার কথা মেনে চলে। আকারেও এরা অন্যদের চেয়ে বড় হয়, প্রায় ১.৮ থেকে ২.২ সেন্টিমিটার। ডিম ফুটে বেরও হয় তাড়াতাড়ি। মাত্র ১৬ দিনের মাথায় পূর্ণাঙ্গ রাণী ডিম থেকে বের হয়ে আসে। রাণী মৌমাছির কাজ হচ্ছে মৌচাকের বাকি র্কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা আর ডিম পাড়া। প্রতিদিন এরা প্রায় ১০০০টিরও বেশি ডিম পেড়ে থাকে। মজার ব্যাপার হলো রাণী ডিম পাড়ে হুল দিয়ে। অবাক হওয়ার কিছু নেই। মৌমাছিরা হুল দিয়ে আত্মরাও করে, আবার ডিমও পাড়ে। একটি রাণী মৌমাছি বাঁচেও বেশিদিন, প্রায় চার থেকে সাত বছর। আমাদের কাছে বিষয়টি তেমন কিছু না হলেও ওদের কাছে অনেক কিছু। কারণ, একটি রাজা মৌমাছি বাঁচে মাত্র কয়েকদিন আর একটি র্কর্মী মৌমাছি বাঁচে বড়জোর কয়েক সপ্তাহ মাত্র। একটি মৌচাকে রাণী মৌমাছি থাকে মাত্র একটি। তবে যদি ডিম ফুটে কোনো নতুন রাণী মৌমাছির জন্ম হয়েই যায় সেেেত্র মৌচাকটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। মানে হলো, আগের রাণী মৌমাছি পুরনো কিছু র্কর্মী নিয়ে নতুন চাক বানিয়ে সেখানে চলে যায়।
রাজা মৌমাছিরা ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ হতে সময় নেয় ২৪ দিন। এরা হলো সব কুঁড়ের বাদশাহ। কোনো কাজ করে না, সারাদিন শুধু খায় দায় আর ঘুরে বেড়ায়। বসে বসে খায় বলেই এরা কর্মীদের চেয়ে একটু বড় আকারের হয়, প্রায় ১.৫ থেকে ১.৭ সেন্টিমিটার। রাজা মৌমাছির চোখ আবার অন্যদের থেকে বড় হয়। এটি দিয়েই রাজার সঙ্গে পার্থক্য করা হয় কর্মী মৌমাছির। তবে শুধু বসে বসে খায় বলে, যখন খাবার থাকে না তখন কিন্তু এদের তাড়িয়ে দেয় কর্মী মৌমাছিরা। আরেকটা মজার কথা হলো, রাজা মৌমাছির হুল নেই। তার পরেও বিপদে পড়লে এরা হুল ফোটাতে ছুটে যায় ভোঁ ভোঁ করে। মানে ভয় দেখায় আর কি! যারা চেনে না কোন্টা রাজা মৌমাছি আর কোন্টা কর্মী মৌমাছি, তারা তো ভয় পাবেই।
মৌচাকের যত ধরনের কাজ আছে, তার সবই করে কর্মী মৌমাছি। যেমন ধর, মৌচাকের ঘর (ঈবষষ)গুলো পরিষ্কার করা, বাচ্চাদের খাবার দেয়া, মৌচাক তৈরি করা, মধু জমা করা এমনকি মৌচাক রা করার দায়িত্বও কিন্তু এদের। কর্মী মৌমছিরা আকারে সবচেয়ে ছোট, প্রায় ১.২ থেকে ১.৫ সেন্টিমিটার। ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ হতে এরা সময় নেয় মোটামুটি ২১ দিন। আর পূর্ণাঙ্গ হতে না হতেই কাজে লেগে পড়ে এরা। কর্মীদের প্রথম কাজ হলো মৌচাক মানে ওদের সেই প্রাসাদটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা। তারপর করতে হয় বাচ্চাদের দেখাশোনার কাজ। এরপরে আসে মধু সংগ্রহ করে তা জমা করা। এমনকি মৌচাকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাটিও এই কর্মী মৌমাছিরই কাজ। এরা পাখা দিয়ে বাতাস করে মৌচাকের তাপমাত্রা বাড়াতে বা কমাতে পারে। এভাবে এরা মৌচাকের তাপমাত্রা সবসময়ই ৩৪০ সেলসিয়াস-এর কাছাকাছি রাখে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিটা ওরা আগে থেকেই জানে।
সবচে’ অভিজ্ঞ কর্মীরা থাকে রণাবেণ বা গার্র্ডের দায়িত্বে। এরা চাকের চারদিকে ঘোরাঘুরি করে আর মৌচাকের ওপর নজর রাখে। যদি অন্য কোনো মৌচাকের মৌমাছি এসে মধু চুরি করে বা যদি ডাকাত আসে তাদেরকে আটকানোটাই ওদের কাজ। ভাবছো নিশ্চয়ই, মৌমাছিদের মধ্যে আবার ডাকাতও আছে নাকি? হ্যাঁ, তাতো আছেই। আমাদের সমাজের মতো ভালো মন্দ মৌমাছিদের সমাজেও আছে; মৌমাছিদেরও ডাকাত আছে। এরা হল ভীমরুল বা বোলতা। এরা নিজেরা ভবিষ্যতের জন্য কিছু জমা করে না। শুধু মৌমাছির উপর ডাকাতি করেই চলে। র্গার্ড মৌমাছিরাও কিন্তু কম যায় না, ডাকাতি করতে এলেই একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওদের উপর। তখন তারা নিজের জীবনটিরও পরোয়া করে না।
এমনিতে কিন্তু মৌমাছিরা খুবই শান্তিপ্রিয়। বিনা কারণে এরা কাউকেই বিরক্ত করে না। শুধুমাত্র আত্মরার জন্যই এরা হুল ফোঁটায়। তাছাড়া নয়। কারণ কর্মী মৌমাছিরা মাত্র একবারই হুল ফোঁটাতে পারে। এদের হুলের গঠন অনেকটা বড়শির মতো। মানে মাথাটা কাঁটাওয়ালা। একবার কোথাও ফোঁটালে তা আর বের করে নিতে পারে না। হুল ফোঁটানোর পরে ওই কর্মী মৌমাছিটা সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায়। রাণী মৌমাছিদের হুল আবার সোজা এবং লম্বা। যা প্রধানত ডিম পাড়তেই তারা ব্যবহার করে।
তবে পৃথিবীতে হুল ছাড়াও মৌমাছি আছে। এরকম প্রায় ১৪টি প্রজাতির মৌমাছি আছে এই পৃথিবীতে। এদের পাওয়া যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। হুল নেই বলে সেখানকার লোকজন এদের বেজায় ভালোবাসে। আর এদের মধুর স্বাদও একটু অন্যরকম, টক-মিষ্টি, সঙ্গে হালকা লেবুর গন্ধ। তবে এরা মধু জমা করে খুবই কম।
মৌমাছিই যে আমাদের মধু দেয়, সেটা কে না জানে। তবে জানার বিষয় হলো মাত্র ১ পাউন্ড (১ পাউন্ড = ০.৪৫৩৬ কেজি প্রায়) মধু জমা করতে এদেরকে প্রায় ৯০,০০০ কিলোমিটার পথ উড়তে হয় আর ১,০০,০০০ এরও বেশি ফুলে যেতে হয় এই মধুর সংগ্রহে। ভাবো একবার! কী পরিমাণ পরিশ্রম করে তবেই না মৌমাছিরা মধু জমা করে। মজার ব্যাপার হলো, এরা এদের মৌচাক থেকে ২ কিলোমিটারের বেশি দূরে কখনই যায় না। এর বেশি যেতে পারে, তবে ফিরে আসতে পারে না, পথ ভুলে যায়। সেজন্য মৌচাকের আশেপাশে থেকেই এরা এতটা পথ পাড়ি দেয়। অর্থাৎ বার বার যাওয়া আসা করে তবেই এই মধু তারা নিয়ে আসে।
মৌমাছি কিন্তু মধু জমা করে রাখে তাদের বাচ্চাদের খাবার আর ভবিষ্যতের জন্য। জেনে রাখো, মৌমাছিরা কিন্তু রুটিও বানায়। এদের প্রধান খাবার হচ্ছে পরাগরেণু আর মধু। এ দু’টো মিশিয়ে এরা যে খাবারটা বাচ্চাদের খাওয়ায় তাকে মৌ-রুটি (ইবব-ইৎবধফ) বলে। যখন এই পরাগরেণু আর মধু পাওয়া যায় না তখনই এদের খাবারের অভাব দেখা দেয়। যেহেতু পরাগরেণু আর মধু দু’টোই পাওয়া যায় ফুল থেকে, তাই ফুল যখন কম ফোটে তখনই এদের খাবার কম থাকে।
মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌচাকে নিয়ে এসে একটা ঘরে জমা করে। সে সময় মধু কাঁচা থাকে। মানে হলো, মধুতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। পরে কর্মী মৌমাছিরা ডানা দিয়ে বাতাস করে পানির পরিমাণ কমিয়ে ফেলে। এতে মধু অনেকদিন ভালো থাকে। এক সময় যখন ঘরটা র্পূর্ণ হয়ে যায় তখন এরা মধুর ঘরটাকে মোমের ঢাকনা দিয়ে আটকে দেয়, যেন বাইরে থেকে ভেতরে ময়লা না পড়ে। এভাবে যতদিন পাওয়া যায় ততদিন র্পর্যন্ত এরা মধু জমা করতেই থাকে।
মৌমাছিদের নিজস্ব সমাজ আছে। আছে নিজস্ব নিয়মনীতি। এই নিয়মনীতি মেনেই তারা চলে। কখনোই তারা তাদের সমাজের কোনো নিয়ম ভাঙে না। শুধু তাই নয়, মৌমাছিদের মধ্যে আছে পরিশ্রম করার মানসিকতা। তবে আমরা কিন্তু মৌমাছিদের কাছ থেকে মধু ছাড়া আরোও অনেক কিছুই পাই। চলো এবার শুনি সেসবের কথা।
মোম : মৌচাক তৈরিতে ব্যবহৃত তো হয়ই আবার মোম থেকে আমাদের জন্য ওষুধও তৈরি হয়।
রয়্যাল-জেলি : মৌমাছিদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার। রাণীদের বেশিদিন ধরে খাওয়ানো হয়। আর অন্যদের কম। আমাদের জন্য এটি ঔষধ তৈরিতে কাজে লাগে। খুব কম পরিমাণে পাওয়া যায় বলে এর দামও অনেক বেশি।
প্রপোলিস : এক ধরনের আঠা, যা মৌচাকের ঘরগুলোকে এক সঙ্গে ধরে রাখে। এটির জীবাণু-বিরোধী গুণ আছে। আমাদের কাছে এর ঔষধিমূল্য অনেক।
মৌমাছির বিষ : হুল ফুটিয়ে এই বিষের ব্যবহার করে মৌমাছিরা। এর জন্যই হুল ফোটানো জায়গাটায় জ্বালা-পোড়া হয়। এরও ঔষধি গুণ অনেক বেশি।
মৌমাছিদের সম্পর্কে এখনও আসল কথাটা কিন্তু বলাই হয়নি। মৌমাছিরা তো মধু সংগ্রহ করতে এক ফুল থেকে আরেকটি ফুলে যায়। এভাবে অনেক ফুলে ঘুরে ঘুরেই তারা মধু সংগ্রহ করে। স্বাভাবিক কারণেই তারা শরীরের সঙ্গে এক ফুলের পরাগরেণু বহন করে নিয়ে যায় অন্য ফুলে। এভাবেই হয় পরাগায়ন। পরাগায়ন ছাড়া উদ্ভিদ বংশবিস্তার করতে পারে না। বেশিরভাগ গাছেরই ফল, বীজ কিছুই হতো না পরাগায়ন ছাড়া। আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য ধান উৎপাদনের জন্য পরাগায়ন জরুরি। এক কথায় বলা সম্ভব যে পরাগায়ন ছাড়া কোনো কিছুই উৎপন্ন হতো না। এই পরাগায়নেই সাহায্য করে মৌমাছি।
১লা জানুয়ারী-ঐতিহাসিক পানি চুক্তি দিবস
৪ঠা জানুয়ারী জাতীয় পুলিশ সপ্তাহ
৬ই জানুয়ারী বাংলাদেশ কৃষি শুমারী দিবস
১৪ জানুয়ারী ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)
২৬ জানুয়ারী আর্ন্তজাতিক শুল্ক দিবস
১৪ ফেব্র“য়ারী বিশ্ব ভালোবাসা দিবস
২১ ফেব্র“য়ারী আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস
৩রা মার্চ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিবস
৮ মার্চ আর্ন্তজাতিক নারী দিবস
১১ মার্চ বিশ্ব কিডনী দিবস
১৭ মার্চ জাতীয় শিশু কিশোর দিবস
২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস
২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস
২৭ মার্চ বিশ্ব নাট্য দিবস
১ লা এপ্রিল- বোকা দিবস
৭ ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস
১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ
২১ এপ্রিল বিশ্ব যুব সেবা দিবস
১ মে আর্ন্তজাতিক শ্রমিক দিবস
৬ ই মে বৌদ্ধ পূর্ণিমা/ বিশ্ব এ্যাজমা দিবস ও বালাকোট দিবস
৮ মে ২৫ শে বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের জন্ম দিন (কুঠি বাড়ী)/ রেডক্রিসেন্ট দিবস
৯ মে বিশ্ব মা দিবস
১২ মে নার্সেস দিবস
১৩ মে বিশ্ব রেড ক্রস দিবস
১৫ ই মে আর্ন্তজাতিক পরিবার দিবস
১৬ মে ফারাক্কা দিবস
১৭ ই মে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস
২৪ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস
২৫ মে নজরুল জন্ম জয়ন্তী? বৌদ্ধ পূর্ণিমা
২৭ মে পবিত্র শবে মেরাজ
৩১ মে হলিডে/ বিশ্ব ধুমপান বর্জন দিবস
৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস
১৪ জুন পবিত্র শবে বারাত
২৩ জুন বিশ্ব পলাশী দিবস
২৬ জুন আর্ন্তজাতিক মাদক বিরোধী দিবস
১ জুলাই বিশ্ব মাতৃ দুগ্ধ সপ্তাহ/ ব্যাংক হলিডে
৪ ঠা জুলাই আর্ন্তজাতিক সমবায় দিবস
১১ জুলাই বিশ্ব জন সংখ্যা দিবস
২০ জুলাই গ্রামীণ সাংবাদিকতার প্রবাদ পুরুষ কাঙাল হরিনাথের জন্ম উৎসব
২৫ জুলাই জুমআতুল বিদ-আ
২৯ জুলাই পবিত্র ঈদ-উল ফিতর
৫ আগষ্ট বিশ্ব বন্ধু দিবস
৬ আগষ্ট হিরোসিমা দিবস/
৯ আগষ্ট নাগাসিকা দিবস/
১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস
১৭ আগষ্ট জন্মাষ্টমী
৮ সেপেটম্বর আর্ন্তজাতিক স্বারতা দিবস
১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় ওজন স্তর দিবস
১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় শিা দিবস
১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব নৌ দিবস
১লা অক্টোবর বিশ্ব শিশু দিবস
৩ রা অক্টোবর বিশ্ব বসতি দিবস
৪ অক্টোবর পবিত্র ঈদুল আযহা/ দূর্গাপূজা
৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক দিবস
৭ অক্টোবর বিশ্ব শিশু দিবস
৮ অক্টোবর প্রাকৃতিক বিপর্যয় হ্রাস দিবস
৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস
১৪ অক্টোবর বিশ্ব মান দিবস/
১৫ অক্টোবর বিশ্ব সাদা ছড়ি দিবস
১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস/
২৪ অক্টোবর জাতী সংঘ দিবস
৩১ অক্টোবর বিশ্ব মিতব্যয়ী দিবস
১ নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস
২ নভেম্বর জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরনোত্তর চু দিবস
৩ রা নভেম্বর জাতীয় জেল হত্যা দিবস/ পবিত্র আশুরা
৪ঠা নভেম্বর জাতীয় শিা দিবস
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস
১৩ নভেম্বর সাহিত্যিক মোশাররফ হোসেনের জন্ম বার্ষিকী
১৪ নভেম্বর বিশ্ব হাটা দিবস ও বিশ্ব ডায়াবেটিক দিবস
২০ নভেম্বর কেয়ারটেকার দিবস
২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস
১লা ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস
২রা ডিসেম্বর আর্ন্তজাতিক দাস প্রথা বিলোপ দিবস
৩রা ডিসেম্বর আর্ন্তজাতিক প্রতিবন্ধী দিবস
৫ ডিসেম্বর সেচ্ছাসেবক দিবস ও যুব দিবস
৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস
৭ ডিসেম্বর আর্ন্তজাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস
৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস
১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস
১৮ ডিসেম্বর আর্ন্তজাতিক অভিবাসন দিবস
২৫ ডিসেম্বর বড় দিন
২৭ ডিসেম্বর জাতীয় যুব দিবস
৩১ ডিসেম্বর ব্যাংক হলিডে
বাতরোগের চিকিৎসা
ওসটিওআর্থ্রাইটিস বা গিঁটে বাত শরীরের যে কোন জোড়ায় হ’তে পারে। তবে ওযন বহনকারী বড় জোড়ায় বেশী হয়। হাত ও পায়ের আঙুলের জোড়া, মেরুদন্ডের জোড়া এবং হাঁটু, কাঁধ ও কটির জোড়ায় বেশী হয়। ‘ওসটিও’ শব্দের অর্থ হাড়, ‘আর্থ্রো’ শব্দের অর্থ জোড়া এবং ‘ইটিস’ অর্থ প্রদাহ। ওসটিওআর্থ্রাইটিস এমন একটি রোগ যেখানে জোড়ার তরুণাস্থি ও হাড়ের য় হয় বেশী, কিন্তু প্রদাহ হয় কিঞ্চিত। একে স্বাভাবিক বাংলায় গিঁটে বাত বলে। ওসটিওআর্থ্রাইটিস শুধুমাত্র তরু
ণাস্থি হাড়ের য় করে না, এটি জোড়ার লাইনিং (সাইনোভিয়াম), জোড়ার কভার (ক্যাপসুল) ও জোড়ার পেশিকে আক্রান্ত করে। গিঁটে বাত হ’লে জোড়া মসৃণ ও লুব্রিকেন্ট থাকে না এবং তরুণাস্থি ও তরুণাস্থির নিচের হাড় য় হ’তে থাকে। জোড়ায় ব্যথা হয়, জোড়া জমে থাকে, মুভমেন্টে ব্যথা বেড়ে যায় ও ক্রেকিং (ক্রিপিটাস) শব্দ হয়, জোড়ায় প্রদাহ হ’তে থাকে এবং মাঝে মাঝে জোড়া আটকে যায়। জোড়ার পেশির খিঁচুনি হয় ও পেশি শুকিয়ে যায় এবং লিগামেন্ট লাক্সিটি হয়। ফলে জোড়া আনস্ট্যাবল হয়। মধ্যবয়সী ও বয়স্কদের ওসটিওআর্থ্রাইটিস বা গিঁটে বাত হয়। ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে এক-তৃতীয়াংশ লোক এবং ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে ৭০% লোক ওসটিওআর্থ্রাইটিস বা গিঁটে বাতে ভুগে। ৫০ বছরের পূর্বে মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা এবং ৫০ বছরের পরে পুরুষদের তুলনায় মহিলারা গিঁটে বাত বা ওসটিওআর্থ্রাইটিসে বেশি ভুগে।
কারণসমূহ : জেনেটিক (বংশগত), ওবেসিটি (অতিরিক্ত ওযন); গ্রন্থি সমস্যা- ডায়াবেটিস, এক্রোমেগালি এবং হাইপো হাইপারথাইরোডিজম। আর্থ্রাইটিস- সেপটিক, রিউমাটয়েড ও গাইটি আর্থ্রাইটিস; মেটাবোসিক (বিপাকীয়)- পেজেটস ও উইলসন ডিজিজ, জন্মগত বা অস্বাভাবিক হাড়ের বৃদ্ধি, স্নায়ু রোগ; আঘাতের কারণে জোড়া ডিসপ্লেসমেন্ট, হাড় ফ্র্যাক্সার, লিগামেন্ট ও তরুণাস্থি ইনজুরি হ’লে অল্প বয়সে গিঁটে বাত শুরু হয়।
লণসমূহ : হাঁটু, কটি, মেরুদন্ড, পা ও হাতের জোড়ায় ব্যথা হয়; জোড়ার মুভমেন্টে ব্যথা বেড়ে যায়; রাতে এবং বিশ্রামে ব্যথা হ’লে বুঝতে হবে রোগ গুরুতর। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আধা ঘণ্টার কম সময় জোড়া জমে থাকে ওসটিওআর্থ্রাইটিসে। আর চল্লিশ মিনিটের বেশি সময় জোড়া জমে থাকে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে।
কটির জোড়া : কটির জোড়ায় ওসটিওআর্থ্রাইটিস বা গিঁটে বাত হ’লে কুঁচকি, নিতম্ব, উরুর ভিতর পাশে এবং হাঁটুতে ব্যথা হয়; জোড়া জমে যাওয়ার জন্য পায়ে মোজা পরতে অসুবিধা হয়; বিভিন্ন মুভমেন্ট সীমিত হয়; খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয়।
ঘাড় ও কোমর : মেরুদন্ডের মধ্যে ঘাড়ের নিচের দিকের এবং কোমরের হাড়ে (কশেরুকা) ওসটিওআর্থ্রাইটিস হয়। ঘাড়, বাহু, হাত, কোমর, লেগ ও পায়ে ব্যথা হয় এবং দুর্বলতা ও অবশ ভাব হ’তে পারে।
কাঁধ : ব্যথাযুক্ত কাঁধে কাত হয়ে ঘুমানো যায় না; হাত সামনে বা পাশে উঠাতে কষ্ট হয়; হাত দিয়ে জামার বোতাম লাগানো যায় না; মাথার চুল আঁচড়ানো কষ্টকর; প্যান্টের পিছনের পকেটে হাত দেয়া ও পিঠ চুলকানো যায় না; কখনও কখনও জোড়া ফুলে যায়; কখনও নড়াচড়ায় জোড়া ছুটে যাবে এমন মনে হয়।
হাঁটু : ফুলা ও ব্যথার জন্য হাঁটুর নড়াচড়া করা যায় না; নড়াচড়ার সময় ক্র্যাকিং (ক্রিপিটাস) শব্দ শুনতে বা বুঝতে পারা যাবে; রোগী বেশিণ বসলে হাঁটু সোজা করতে কষ্ট হয়; অনেক সময় হাঁটু আটকে যায়, রোগী হাঁটুকে বিভিন্নভাবে মুভমেন্ট করিয়ে সোজা করে; হাঁটুর পেশি শুকিয়ে যায় এবং হাঁটুতে শক্তি কমে যায়; উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটা যায় না, সিঁড়ি দিয়ে উঠা-নামা করতে এবং বসলে উঠতে কষ্ট হয়; হাঁটু ইনসিকিউর বা আনষ্ট্যাবল মনে হয়, দাঁড়াতে বা হাঁটতে চেষ্টা করলে মনে হয় হাঁটু ছুটে যাচ্ছে বা বেঁকে যাচ্ছে।
আঙ্গুল : হাতের আঙ্গুলের শেষের (ডিসটাল) জোড়ায় ব্যথা হয়; জোড়া জমে যায়; নতুন হাড় (হেবেরডেন নোডস) হয়ে জোড়া ফুলে যায়।
ল্যাবরেটরি পরীা : রক্তের বিভিন্ন পরীা; এক্স-রে; জয়েন্ট স্পেস কমে, তরুণাস্থির নিচে হাড়ের মধ্যে সিস্ট ও ওসটিওফাইট (নুতন হাড়); এমআরআই।
চিকিৎসা : চিকিৎসার শুরুতেই ওসটিওআর্থ্রাইটিস বা গিঁটে বাতের কারণ এবং রোগের তীব্রতা নির্ণয় করা একান্ত প্রয়োজন। এ রোগ একবার শুরু হ’লে প্রকৃতির নিয়মে বাড়তে থাকে। তবে দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থা পরিবর্তন ও সুষ্ঠু কিছু নিয়মের মাধ্যমে ওসটিওআর্থ্রাইটিসের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ এবং উপসর্গ লাঘব করা যায়।
কনজারভেটিভ বা মেডিকেল ব্যবস্থা : ওবেসিটি বা অতিরিক্ত ওযন কমাতে হবে। ফল, শাকসবজি, কম ক্যালোরি, কম সুগার ও কম চর্বি যুক্ত খাবার, শিম, মটরশুটি, চর্বিবিহীন গোশত, বাদাম ও অত খাদ্যশস্য ইত্যাদি খেতে হবে। স্ট্রেসিং ও পেশি শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম জোড়ার মুভমেন্ট বজায় রাখে এবং জোড়া জমে যাওয়া লাঘব করে। ভুল ব্যায়াম জোড়ার তি করে এবং রোগকে অতিরঞ্জিত করে। জোড়ার চারপাশের পেশি ও টিস্যু সংকুচিত হ’লে স্বাভাবিক মুভমেন্টে পুনঃরুদ্ধার করা বড়ই কঠিন। ওয়াকিং স্টিক, উঁচু চেয়ার, ব্রেচ বা হাঁটু সাপোর্ট ও কুশন যুক্ত জুতা ব্যবহার করলে কোমর, কটি ও হাঁটুর ব্যথা কম হবে। গরম ও ঠান্ডা সেঁক ব্যবহারে পেশির সংকোচন কমবে, রক্ত চলাচল বাড়বে এবং ব্যথা কমবে। বেদনানাশক ওষুধ সেবন। কনড্রিওটিন সালফট/কোরাইড সেবনে তরুণাস্থি য় নিবারণ হবে। ভিটামিন সি, ই ও ডি এবং ক্যালসিয়াম নিয়মিত সেবনে রোগের তীব্রতা কমে আসবে। ফিজিকেল থেরাপি এসডব্লিউডি, ইউএসটি ও টিইএনএস ব্যবহারে পেশির সংকোচন, জমে যাওয়া ও ব্যথা উপশম হবে। ইনজেকশন স্টেরয়েড ও হায়ালুরোনিক এসিড জয়েন্টে পুশ করলে রোগের উপসর্গ সাময়িক উপশম হবে। ইনজেকশন এক বছরে তিন বা চারের অধিকবার দেয়া নিষেধ।
সার্জিকেল চিকিৎসা : সার্জিকেল চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে। কনজারভেটিভ চিকিৎসায় ভাল না হ’লে; রোগের উপসর্গ রোগীর দৈনন্দিন জীবন ব্যবস্থাকে অসহ্য করে তুললে; তরুণাস্থি ও হাড়ের য় দ্রুত হচ্ছে; ক্রমান্বয়ে জোড়া বিকৃত হচ্ছে।
সার্জিকেল পদ্ধতি : আর্থ্রোস্কোপিক জয়েন্ট ল্যাভেজ। আর্থ্রোস্কোপিক ডেব্রাইডমেন্ট। রোটেশনাল ওসটিওটোমি। জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট। আর্থ্রোস্কোপিক বা জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট চিকিৎসায় রোগের উপসর্গ দ্রুত উপশম হবে।
গড়াই ২৪ অনলাইন নিউজ পত্রিকা
থেকে বিশেষ সম্মাননা পেলেন রাব্বি
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পত্রিকা গড়াই ২৪ ডট কম থেকে বিশেষ সম্মাননা পেলেন কুষ্টিয়া অঞ্চলের ব্যুরো প্রধান আল আমিন খান রাব্বি। মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা গাড়াগঞ্জে স্থানীয় ব্যুরো অফিসে খুলনা বিভাগীয় অঞ্চলের প্রতিনিধি সম্মেলনে তাকে এই বিষেশ সম্মাননা প্রদানা করা হয়।
অনাড়ম্বর এই অনুষ্ঠানে অনলাইন নিউজ পত্রিকা গড়াই ২৪ ডট কম এর প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম নিজাম উদ্দিন আল আমিন খান রাব্বিকে সম্মাসুচক ক্রেষ্ট প্রদান করেন। এসময় খুলনা বিভাগীয় অঞ্চলের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনাড়ম্বর এই অনুষ্ঠানে অনলাইন নিউজ পত্রিকা গড়াই ২৪ ডট কম এর প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম নিজাম উদ্দিন আল আমিন খান রাব্বিকে সম্মাসুচক ক্রেষ্ট প্রদান করেন। এসময় খুলনা বিভাগীয় অঞ্চলের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আগামী দিনের টেলিস্কোপ
দূরের জিনিস দেখার জন্য টেলিস্কোপ ব্যবহার হয়। বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর হাত ধরে যাত্রা শুরু হয়েছিল টেলিস্কোপের। গ্যালিলিও টেলিস্কোপের সাহায্যে বিভিন্ন গ্রহের পরিভ্রমণ পথ পরীক্ষা করে ঘোষণা দিয়েছিলেন সূর্য নয়, পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে ঘোরে। বর্তমানে আধুনিক অনেক টেলিস্কোপ তৈরি হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এখন টেলিস্কোপের নতুন যুগে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
গ্যালিলিওর মৃত্যুর পর আইজ্যাক নিউটন টেলিস্কোপ নিয়ে কাজ শুরু করেন। পৃথিবীতে বর্তমানে প্রতিসরণ ও প্রতিফলন- এ দুই ধরনের টেলিস্কোপ ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিসরণ টেলিস্কোপের উদ্ভাবক গ্যালিলিও গ্যালিলি এবং প্রতিফলন টেলিস্কোপের আবিষ্কারক আইজ্যাক নিউটন।
প্রতিসরণ টেলিস্কোপ : এ টেলিস্কোপের সামনে একটি অবতল লেন্স এবং অভিনেত্র হিসেবে একটি ছোট অবতল লেন্স থাকে। প্রতিসারক হিসেবে প্রতিসরণ টেলিস্কোপের মূল উপাদান হলো লেন্স। সামনের লেন্সটিকে প্রধান লেন্স বলে। এটি আলো সংগ্রহ করে এবং নলের ভেতর ছবি তৈরি করে। অভিনেত্র বিবর্ধক কাচের কাজ করে। ফলে দর্শক নলের ভেতর তৈরি ছবিটিকে অনেক বড় দেখতে পান।
গ্যালিলিওর মৃত্যুর পর আইজ্যাক নিউটন টেলিস্কোপ নিয়ে কাজ শুরু করেন। পৃথিবীতে বর্তমানে প্রতিসরণ ও প্রতিফলন- এ দুই ধরনের টেলিস্কোপ ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিসরণ টেলিস্কোপের উদ্ভাবক গ্যালিলিও গ্যালিলি এবং প্রতিফলন টেলিস্কোপের আবিষ্কারক আইজ্যাক নিউটন।
প্রতিসরণ টেলিস্কোপ : এ টেলিস্কোপের সামনে একটি অবতল লেন্স এবং অভিনেত্র হিসেবে একটি ছোট অবতল লেন্স থাকে। প্রতিসারক হিসেবে প্রতিসরণ টেলিস্কোপের মূল উপাদান হলো লেন্স। সামনের লেন্সটিকে প্রধান লেন্স বলে। এটি আলো সংগ্রহ করে এবং নলের ভেতর ছবি তৈরি করে। অভিনেত্র বিবর্ধক কাচের কাজ করে। ফলে দর্শক নলের ভেতর তৈরি ছবিটিকে অনেক বড় দেখতে পান।
প্রতিফলন টেলিস্কোপ : নিউটনের তৈরি এই টেলিস্কোপে প্রথমে একটি অবতল দর্পণে আলো আসে। দর্পণটি নলের ভেতর আলোকে কেন্দ্রীভূত করে। একটি সমতল দর্পণ আলোকে নলের অপর পাশে পাঠিয়ে দেয়, যেখানে থাকা অভিনেত্রটি আলোকে বা বস্তুর প্রতিবিম্বকে বিবর্ধিত করে। প্রায় সব বড় টেলিস্কোপই প্রতিফলন টেলিস্কোপ।
মহাকাশ গবেষণায় টেলিস্কোপ : বর্তমানে গবেষকেরা মহাকাশে প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধানে নতুন টেলিস্কোপ স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছেন। ই-ইএলটি নামক টেলিস্কোপটি হবে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ। ইতোমধ্যে অক্সফোর্ড ও ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা নতুন এ টেলিস্কোপের নকশা প্রণয়ন করেছেন। ইউরোপিয়ান এক্সট্রিমলি লার্জ টেলিস্কোপ জ্যোতির্বিদদের দূরবর্তী গ্যালাক্সির তারা ও গ্রহের ছবি তুলতে বিশেষ সাহায্য করবে বলে গবেষকেরা জানিয়েছেন। চিলির আটাক্যামা মরুভূমিতে তিন হাজার ৬০ মিটার উচ্চতায় গবেষকেরা টেলিস্কোপটি স্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। বৃহত্তম এ টেলিস্কোপ স্থাপনে ৩৫ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড ব্যয় হবে। আধুনিক পদ্ধতির ত্রিমাত্রিক ছবি তুলতে সক্ষম টেলিস্কোপটি নির্মাণ হবে দ্রুত।
পানির নিচে টেলিস্কোপ : সুপারনোভা, বিগব্যাংকসহ মহাবিশ্ব বিষয়ে তথ্য উদঘাটনের জন্য বিজ্ঞানীরা ভূমধ্যসাগরের দুই মাইল নিচে প্রায় আধা মাইল দীর্ঘ একটি টেলিস্কোপ বসানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। প্রায় ২১ কোটি পাউন্ড খরচ করে তৈরি করা হবে নতুন ধরনের এ টেলিস্কোপটি। মাল্টি-কিউবিক কিলোমিটার নিউট্রিনো টেলিস্কোপ বা সংক্ষেপে কেএম৩এনইটি নামে এ টেলিস্কোপটি মহাশূন্য থেকে পৃথিবীতে আসা নিউট্রিনো কণা শনাক্ত করতে কাজ করবে। নতুন এ টেলিস্কোপ নিউট্রিনো কণার সন্ধান পাবে এবং সুপারনোভা, বিগব্যাংকসহ মহাবিশ্ব বিষয়ে নতুন তথ্য জানাবে। গবেষকেরা টেলিস্কোপটির নাম দিয়েছেন ‘মাল্টি-কিউবিক কিলোমিটার নিউট্রিনো টেলিস্কোপ’। মহাবিশ্বের জন্য নতুন জানালা উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে কেএম৩এনইটি। নিউট্রিনো ব্যবহার করে এ বিশ্বের তথ্য জানার এ পদ্ধতির পুরো বিষয়টিই এক নতুন ধারণা। ভূমধ্যসাগরের নিচে বসানো বিশাল আকারের টেলিস্কোপটি আগামী তিন বছরের মধ্যেই তথ্য দেয়া শুরু করবে। টেলিস্কোপটিতে বিচ বল আকারের ১২ হাজার সেন্সর লাগানো হয়েছে, যা পানির নিচে এক ঘন মাইলের মধ্যে সাজানো থাকবে।
ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ : নাসার গবেষকেরা নাসার একজন প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জেমস ওয়েবের নামানুসারে তৈরি করেছেন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারে নির্মিত ২৪ মিটার দীর্ঘ আর ১২ মিটার উচ্চতার এই টেলিস্কোপটি পৃথিবী থেকে দেড় মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে স্থাপনের পরিকল্পনা চলছে। সব ঠিকঠাক থাকলে ‘বিশ্বজগতের জানালা’ হিসেবে পরিচিত হাবল টেলিস্কোপকে ২০১৩ সালের জুন মাসে অবসরে পাঠানো হবে আর সূচনা হবে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের যুগ। এই প্রজেক্টটি পরিচালনা করছে নাসার গডার্ড স্পেস ফাইট সেন্টার। প্রায় ১৭টি দেশের এক হাজারেরও বেশি গবেষক ও প্রকৌশলী কাজ করছেন এই প্রকল্পে। আলোর প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য এই টেলিস্কোপে রয়েছে ক্যামেরার শাটারের মতো ৬২ হাজার ৪১৫টি ছিদ্র। এর মাধ্যমে খুব সহজেই তড়িৎ চৌম্বকীয় বর্ণালী স্পষ্ট ছবি ধারণ করতে সক্ষম হবে। হাবল টেলিস্কোপ পৃথিবী থেকে প্রায় ছয় শ’ কিলোমিটার দূরে থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। অন্য দিকে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ পৃথিবী থেকে প্রায় দেড় মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে।
পৃথিবীর রহস্য উদঘাটনে টেলিস্কোপ : পৃথিবীর রহস্য উদঘাটনে তৈরি হবে সুপার টেলিস্কোপ। বিশ্বের খ্যাতিমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস করপোরেশন (আইবিএম) নেদারল্যান্ডসের ইনস্টিটিউট ফর রেডিও অ্যাস্ট্রোনমির (অ্যাসট্রন) সাথে যৌথভাবে এক রেডিও টেলিস্কোপ তৈরির পরিকল্পনা করছে। এ টেলিস্কোপ সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এ টেলিস্কোপ ও সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে মহাশূন্যের অজানা তথ্য ও পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে। নতুন এ সুপার কম্পিউটার খুব স্বল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যয়ে ব্যবহার করা যাবে। এর মাধ্যমে দুর্বল রেডিও সিগন্যাল বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে। প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি বছর আগে মহাশূন্য তৈরির সময় যে বিগব্যাং হয়েছিল, তা থেকে বিচ্ছুরিত দুর্বল আলোক রশ্মিগুলো এ সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হবে।
নতুন এ রেডিও টেলিস্কোপের নাম স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে টেলিস্কোপ। নতুন এ সুপার টেলিস্কোপ তৈরির কাজ ২০১৭ সালে শুরু হবে। এ টেলিস্কোপটি অস্ট্রেলিয়া অথবা দক্ষিণ আফ্রিকায় স্থাপন করা হতে পারে। ২০২৪ সাল নাগাদ এটি তৈরির কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে এর নির্মাতা কর্তৃপক্ষ। সৌরজগতের চারপাশের তথ্য, অন্ধকারাচ্ছন্ন বিষয় এমনকি বিশ্ব তৈরির রহস্যও এর মাধ্যমে জানা যাবে। নতুন এ টেলিস্কোপে সংযুক্ত সুপার কম্পিউটার বর্তমানের বেশ কয়েক লাখ সুপার কম্পিউটারের সমপরিমাণ শক্তিশালী হবে। প্রতিদিন এ টেলিস্কোপে সংযুক্ত সুপার কম্পিউটার দৈনিক ১ এঙাবাইট (১০ লাখ টেরাবাইট) তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারবে। এ প্রকল্পের বিষয়ে আইবিএমের প্রধান গবেষক রোনাল্ড লুজটেন জানিয়েছেন, ‘অতীতের বিষয় জানতে আমরা ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি উন্নতি করার চেষ্টা করছি। এ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ব্যয়ের বিষয়টিও আমরা বিবেচনায় রাখছি। কারণ অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যুৎসাশ্রয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।’এ টেলিস্কোপ তৈরিতে ১৫০ কোটি ইউরো ব্যয় হতে পারে বলে জানিয়েছে আইবিএম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন