কুদরতে খোদা সবুজ : বাংলাদেশ ভারত পানি চুক্তির 18 বছরেও চুক্তি অনুযায়ী পানি পায়নি বাংলাদেশ। তবু প্রতি বছর চলে চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে পদ্মা নদীতে পানি পরিমাপ। ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশ ও ভারতের ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম পাকশী পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের ৮ হাজার ফিট আপে এই পানির পরিমাপ ও পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। ভারতের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন সে দেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস কে চতুরবেদী ও সহকারী প্রকৌশলী জি ভেন্যু গোপাল এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগ পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রইচ উদ্দিন ও শাখা অফিসার মো: মোফাজ্জল হোসেন। সুত্র জানায়, বাংলাদেশ ভারত পানি চুক্তির 18 বছরেও চুক্তি অনুযায়ী পানি পায়নি বাংলাদেশ। এবারো বাংলাদেশ পদ্মা নদীর পানি ৮-১০ হাজার কিউসেক কম পেয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী পানি না পাওয়ায় ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে পদ্মা গড়াই নদীসহ ১৮টি নদী পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। পদ্মা নদীতে পানি শূন্যতার কারণে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১১টি
স্প্যান চরের উপর দাঁড়িয়ে আছে। বৃহত্তর কুষ্টিয়ায় পানির অভাবে কৃষি আবাদে দেখা দিয়েছে মরুময়তা। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও যশোর জেলার ১৩টি উপজেলার ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলকে মরুময়তার হাত থেকে রক্ষার জন্য ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৩০ বছরের পানি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ভারত বাংলাদেশকে ১ জানুয়ারী থেকে ৩১মে পর্যন্ত ৩৬ হাজার কিউসেক পানি দেয়ার কথা। পানি চুক্তির ১৭ বছর অতিক্রম করলেও বাংলাদেশ তার ন্যায্য হিস্যা পায়নি। দু'দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেইে ভারত বাংলাদেশকে কম পানি দিয়ে আসছে। পানির অভাবে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর নিচে জেগেছে বিশাল চর। পানি শূন্যতার কারণে চাষাবাদসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মরুময়তা দেখা দিয়েছে। পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি কমতে কমতে পদ্মা অনেকটা খালের আকার ধারণ করেছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি পিলারের মধ্যে ১১টি পিলারের নিচে পানি নেই। পানি শুকিয়ে নদীতে জেগে উঠেছে ছোট বড় অসংখ্য চর। আর সেই বালু চরে চলছে চাষ-আবাদ। ধু-ধু বালুচরের একপাশ দিয়ে স্রোতহীন পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার শাখা উপশাখা নদীগুলোর অবস্থা আরো করুণ। এ অবস্থার বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমিশনের (জে আরসি) প্রতিনিধি দল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি পর্যবেক্ষণ করে পানি প্রবাহের ফলাফল দিলেও তাতে কোন ফল আসেনি। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে জেগে আছে বিশাল চর, পিলারগুলো শীর্ণ ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে বালির উপর। পদ্মা নদীর চরে কৃষকরা আবাদ করছে বিভিন্ন সবজি ও ফসলের। আখের আবাদ হয়েছে অনেক। পদ্মার চরে এখন কৃষকদের হাল চাষের মওসুম। পানি না থাকায় কৃষকদের ব্যস্ততা বেড়েছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারতের পানি চুক্তির ১৭তম বছর অতিক্রম করছে। চুক্তি অনুযায়ী পানি পরিমাপের জন্য একটি পর্যবেক্ষক দল প্রেরণ করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায়। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ থেকে ১০ হাজার মিটার ভাটিতে ভারত-বাংলাদেশ পানি পর্যবেক্ষণ টিম পানির প্রবাহ ও পানির স্তর পরিমাপ করে। বাংলাদেশ পদ্মা নদীর পানি এবারও ৮-১০ হাজার কিউসেক কম পেয়েছে। ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে পানি পরিমাপ কার্যক্রম। পানিচুক্তির ১৭ বছর অতিক্রম করলেও পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে সরকারও নিরবতা পালন করছে। এ কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল মরুময়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। জানা যায়, ৩০ বছরের পানি চুক্তি ১ জানুয়ারি ১৭ তম বর্ষে পদার্পণ করছে। হাইড্রোলজি বিভাগ সূত্র জানায়, চুক্তির প্রথম বছর অর্থাৎ ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির স্তর ছিল সাত দশমিক ২৫০ মিটার। এ পয়েন্টে প্রতি বছর পানির স্তর কমে আসছে। শুষ্ক মওসুমে পানির স্তর তিন মিটারে নেমে আসে। আশঙ্কাজনকহারে পদ্মায় পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় পাবনার ২০-২৫টি নদী ইতোমধ্যে তার নাব্যতা হারিয়েছে। চুক্তির প্রথম বছরে ১ থেকে ১০ জানুয়ারি সাইকেলে বাংলাদেশের পানি পাওয়ার প্রাপ্যতা ছিল ৬৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক। সেখানে পাওয়া যায় ৭০ হাজার ১২২ কিউসেক। শর্তানুযায়ী চুক্তির প্রথম বছরের প্রথম সাইকেলে পানি পাওয়া কিছুটা বেশি হলেও পরে ভারত বাংলাদেশকে একতরফা পানি কম দিয়ে আসছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়। বিগত সময়ে বাংলাশে চুক্তি অনুযায়ী পানি না পাওয়ার রিপোর্ট পেশ করলেও ভারত সে ব্যাপারে কোন তোয়াক্কা করেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে মে'র শেষ দিন পর্যন্ত ভারত ফারাক্কা পয়েন্টে ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল এই চল্লিশ বছরের গড় হারে বাংলাদেশ পানি পাওয়ার কথা। এছাড়াও শুষ্ক মওসুমে প্রতি সেকেন্ডে ৩৫ হাজার ঘনফুট পানি প্রবাহের কথা রয়েছে। কিন্তু চুক্তির শুরু থেকেই এ পানি কম দিয়ে আসছে ভারত। তাদের ওয়াদা তারা পালন করেনি। পানিচুক্তি একটি নিষ্ফল চুক্তিতে পরিণত হয়েছে। জানা যায়, হিমালয়ের বরফগলা পানিতে গঙ্গা নদীর অববাহিকার আয়তন ৮ লাখ ৬১ হাজার ৪০৪ বর্গকিলোমিটার। পদ্মা থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজেক্টে পানির জোগান প্রতি বছর দাঁড়ায় ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনমিটার। পানি প্রবাহের হার ৪ লাখ ৪২ হাজার ১৭০ ঘনমিটার প্রতি ২ কিলোমিটার। ২ হাজার ৫২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের গঙ্গা নদীর অববাহিকায় ভারত ১ কোটি ৩০ লাখ হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা করেছে। অন্যদিকে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতা (জিকে প্রজেক্ট) সেচ প্রকল্প, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প, পানাসি (পাবনা-নাটোর ও সিরাজগঞ্জ) প্রকল্প, বরেন্দ্র প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের হাজার হাজার একর জমিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও পাম্প ব্যবহার করে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। জিকে প্রজেক্টে ১ লাখ ৯৭ হাজার একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৪২ হাজার একর আবাদি জমি। যে জমিতে এখন আখ, বাদাম (যে ফসলে পানির প্রয়োজন কম হয়) চাষে ব্যস্ত রয়েছেন নদীপাড়ের কৃষক। কুষ্টিয়ার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। নলকূপে পানি পাচ্ছে না। বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষি আবাদে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এতে সেচ প্রকল্পের অধীনে ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমি আবারদ মারাতœক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলাসহ ৫ জেলায় মরুময়তা দেখা দিয়েছে। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও যশোর জেলার ১৩টি উপজেলায় ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করা চাষীদের দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানি চুক্তির ১৭ বছর পার হলেও চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি না পাওয়ায় ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে এদেশের নদী নালা খাল-বিল পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। ভারতের সাথে চুক্তি করে সেই চুক্তি অনুযায়ী পানি পাওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হতে শুরু করেছে।
স্প্যান চরের উপর দাঁড়িয়ে আছে। বৃহত্তর কুষ্টিয়ায় পানির অভাবে কৃষি আবাদে দেখা দিয়েছে মরুময়তা। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও যশোর জেলার ১৩টি উপজেলার ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলকে মরুময়তার হাত থেকে রক্ষার জন্য ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৩০ বছরের পানি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ভারত বাংলাদেশকে ১ জানুয়ারী থেকে ৩১মে পর্যন্ত ৩৬ হাজার কিউসেক পানি দেয়ার কথা। পানি চুক্তির ১৭ বছর অতিক্রম করলেও বাংলাদেশ তার ন্যায্য হিস্যা পায়নি। দু'দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকেইে ভারত বাংলাদেশকে কম পানি দিয়ে আসছে। পানির অভাবে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতুর নিচে জেগেছে বিশাল চর। পানি শূন্যতার কারণে চাষাবাদসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মরুময়তা দেখা দিয়েছে। পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি কমতে কমতে পদ্মা অনেকটা খালের আকার ধারণ করেছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি পিলারের মধ্যে ১১টি পিলারের নিচে পানি নেই। পানি শুকিয়ে নদীতে জেগে উঠেছে ছোট বড় অসংখ্য চর। আর সেই বালু চরে চলছে চাষ-আবাদ। ধু-ধু বালুচরের একপাশ দিয়ে স্রোতহীন পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার শাখা উপশাখা নদীগুলোর অবস্থা আরো করুণ। এ অবস্থার বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমিশনের (জে আরসি) প্রতিনিধি দল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি পর্যবেক্ষণ করে পানি প্রবাহের ফলাফল দিলেও তাতে কোন ফল আসেনি। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে জেগে আছে বিশাল চর, পিলারগুলো শীর্ণ ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে বালির উপর। পদ্মা নদীর চরে কৃষকরা আবাদ করছে বিভিন্ন সবজি ও ফসলের। আখের আবাদ হয়েছে অনেক। পদ্মার চরে এখন কৃষকদের হাল চাষের মওসুম। পানি না থাকায় কৃষকদের ব্যস্ততা বেড়েছে। জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারতের পানি চুক্তির ১৭তম বছর অতিক্রম করছে। চুক্তি অনুযায়ী পানি পরিমাপের জন্য একটি পর্যবেক্ষক দল প্রেরণ করা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায়। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ থেকে ১০ হাজার মিটার ভাটিতে ভারত-বাংলাদেশ পানি পর্যবেক্ষণ টিম পানির প্রবাহ ও পানির স্তর পরিমাপ করে। বাংলাদেশ পদ্মা নদীর পানি এবারও ৮-১০ হাজার কিউসেক কম পেয়েছে। ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে পানি পরিমাপ কার্যক্রম। পানিচুক্তির ১৭ বছর অতিক্রম করলেও পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে সরকারও নিরবতা পালন করছে। এ কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল মরুময়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। জানা যায়, ৩০ বছরের পানি চুক্তি ১ জানুয়ারি ১৭ তম বর্ষে পদার্পণ করছে। হাইড্রোলজি বিভাগ সূত্র জানায়, চুক্তির প্রথম বছর অর্থাৎ ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির স্তর ছিল সাত দশমিক ২৫০ মিটার। এ পয়েন্টে প্রতি বছর পানির স্তর কমে আসছে। শুষ্ক মওসুমে পানির স্তর তিন মিটারে নেমে আসে। আশঙ্কাজনকহারে পদ্মায় পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় পাবনার ২০-২৫টি নদী ইতোমধ্যে তার নাব্যতা হারিয়েছে। চুক্তির প্রথম বছরে ১ থেকে ১০ জানুয়ারি সাইকেলে বাংলাদেশের পানি পাওয়ার প্রাপ্যতা ছিল ৬৭ হাজার ৫১৬ কিউসেক। সেখানে পাওয়া যায় ৭০ হাজার ১২২ কিউসেক। শর্তানুযায়ী চুক্তির প্রথম বছরের প্রথম সাইকেলে পানি পাওয়া কিছুটা বেশি হলেও পরে ভারত বাংলাদেশকে একতরফা পানি কম দিয়ে আসছে বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়। বিগত সময়ে বাংলাশে চুক্তি অনুযায়ী পানি না পাওয়ার রিপোর্ট পেশ করলেও ভারত সে ব্যাপারে কোন তোয়াক্কা করেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে মে'র শেষ দিন পর্যন্ত ভারত ফারাক্কা পয়েন্টে ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল এই চল্লিশ বছরের গড় হারে বাংলাদেশ পানি পাওয়ার কথা। এছাড়াও শুষ্ক মওসুমে প্রতি সেকেন্ডে ৩৫ হাজার ঘনফুট পানি প্রবাহের কথা রয়েছে। কিন্তু চুক্তির শুরু থেকেই এ পানি কম দিয়ে আসছে ভারত। তাদের ওয়াদা তারা পালন করেনি। পানিচুক্তি একটি নিষ্ফল চুক্তিতে পরিণত হয়েছে। জানা যায়, হিমালয়ের বরফগলা পানিতে গঙ্গা নদীর অববাহিকার আয়তন ৮ লাখ ৬১ হাজার ৪০৪ বর্গকিলোমিটার। পদ্মা থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজেক্টে পানির জোগান প্রতি বছর দাঁড়ায় ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনমিটার। পানি প্রবাহের হার ৪ লাখ ৪২ হাজার ১৭০ ঘনমিটার প্রতি ২ কিলোমিটার। ২ হাজার ৫২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের গঙ্গা নদীর অববাহিকায় ভারত ১ কোটি ৩০ লাখ হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা করেছে। অন্যদিকে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতা (জিকে প্রজেক্ট) সেচ প্রকল্প, পাবনা সেচ ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প, পানাসি (পাবনা-নাটোর ও সিরাজগঞ্জ) প্রকল্প, বরেন্দ্র প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের হাজার হাজার একর জমিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও পাম্প ব্যবহার করে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। জিকে প্রজেক্টে ১ লাখ ৯৭ হাজার একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৪২ হাজার একর আবাদি জমি। যে জমিতে এখন আখ, বাদাম (যে ফসলে পানির প্রয়োজন কম হয়) চাষে ব্যস্ত রয়েছেন নদীপাড়ের কৃষক। কুষ্টিয়ার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। নলকূপে পানি পাচ্ছে না। বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষি আবাদে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এতে সেচ প্রকল্পের অধীনে ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমি আবারদ মারাতœক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলাসহ ৫ জেলায় মরুময়তা দেখা দিয়েছে। কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও যশোর জেলার ১৩টি উপজেলায় ১ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করা চাষীদের দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানি চুক্তির ১৭ বছর পার হলেও চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি না পাওয়ায় ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে এদেশের নদী নালা খাল-বিল পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। ভারতের সাথে চুক্তি করে সেই চুক্তি অনুযায়ী পানি পাওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হতে শুরু করেছে।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন