শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৪

কুষ্টিয়ায় বেড়েই চলেছে যা রোগীর সংখ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুষ্টিয়ায় বেড়েই চলেছে যা রোগীর সংখ্যা। গত এক বছরে ২২৯৮ জন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় কুষ্টিয়া ব ব্যাধি কিনিক ও ব্র্যাক যৌথভাবে কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলায় কাজ করার কথা থাকলেও তাদের তৎপরতা জনসাধারণের উপর পড়ছে না বলে অভিযোগ করেছে জেলার সুশীল সমাজ। ব্র্যাক কিছুদিন গ্রাম ও শহরে কাজ করলেও এখন তাদের কার্যক্রম সভা-সমাবেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছে। ফলে সংশ্লিষ্টরা যা রোগ সম্পর্কে কার্যক্রম গ্রহণ না করায় রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, জেলার ৬টি উপজেলা ও সিডিসিভুক্ত পৌর এলাকা ২০১৩ সালে সর্বমোট ২২৯৮জন রোগীকে সনাক্ত করে তাদের বিভিন্ন পরীা-নিরিা করে আধুনিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে কুষ্টিয়াসহ ৫টি সিডিসিভুক্ত পৌর এলাকায় ৯৯ জন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৩৯৩ জন, কুমারখালী ৩৭১ জন, খোকসায় ২১৫ জন, মিরপুরে ৪২০ জন, ভেড়ামারায় ২৪০ এবং দৌলতপুর উপজেলায় ৬৬০ জন বিভিন্ন ধরনের যায় আক্রান্ত হয়েছেন। কুষ্টিয়া ব ব্যাধি কিনিকের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ হালিমা খাতুন জানান, এসব রোগীদের তিনটি কোয়ার্টারে ভাগ করে কাশি সংগ্রহ করে বিভিন্ন পরীা-নিরীার পর প্রয়োজনে রোগীর ধরন বুঝে এক্স-রে করিয়ে তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। বর্তমানে কিনিকে ইউএস এইডের দেয়া মাল্টি ড্রাগস রেজিষ্টেন্ট (এমডিআর) কাশি পরীার আধুনিক দুটি যন্ত্র দিয়ে মাত্র ২ঘন্টায় রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। যেহেতু নিজেদের এক্স-রে মেশিন বিকল তাই পৌরসভার বাইরের রোগীদের এক্স-রে খরচ বহন করে ব্র্যাক।
ব্র্যাক সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬টি উপজেলায় ব্র্যাকের ৩৫টি কেন্দ্র রয়েছে। এদের কর্মীসংখ্যা ৪২। স্বাস্থ্যসেবিকা ডটস কার্যক্রমে রয়েছে ১২৬৩ জন। স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে ৭৯ জন। প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বুধবার গ্রামে গঞ্জে রোগীর কাশি সংগ্রহ চলে। এটা পরীা-নিরীার জন্য কমিউনিটি সেন্টার অথবা এফডাবিউসিতে জমা দেয়া হয়। এছাড়াও জেলায় ব্র্যাকের মোট ১২টি ল্যাব রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি ল্যাব রয়েছে ভ্রাম্যমাণ। এরা সাটেলাইট সেবা প্রদান করে থাকে। কাশি থেকে রোগ ধরা পড়লে তখন ওই রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এরপর ব্র্যাকের ডটস পদ্ধতিতে ৬ মাস চিকিৎসা প্রদানের মধ্যদিয়ে রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা হয়। সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ও ব্র্যাক যৌথভাবে কুষ্টিয়ার প্রতিটি অঞ্চলে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে বর্তমানে যা রোগ এখন আর আতঙ্কের কিছু নয় বলে তাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া যায়। তবে যার ওষুধের জন্য গবেষক, চিকিৎসককে যুগ যুগ ধরে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। আর যা নামের এই ব্যাধি মানবজীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে অনেক মূল্যবান প্রাণ। অনেকের প্রিয়জন চলে গেছে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে। মানুষ যা থেকে রার মুক্তির পথ খুঁজেছে বছরের পর বছর ধরে। সভ্যতার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা জগতেও এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। যায় যতটা না তি হয়েছে তার চেয়ে বেশি তি হয়েছে সমাজের মধ্যে সুদীর্ঘকাল ধরে যে কুসংস্কার, অপচিকিৎসা, অশিা-কুশিার ফলে। মূলত কুসংস্কার ও মানুষের মধ্যে এই রোগ সম্পর্কে যে ভীতি ছিল তা কুরে কুরে খেয়েছে মানব সভ্যতাকে।
যা রোগ নিয়ন্ত্রণে গত কয়েক বছর ব্র্যাক তাদের তৎপরতা নিয়ে জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ শুরু করেছিল। গণসচেতনতা তারা বেশ সাড়া ফেলেছিল কিন্তু গত বছর তাদের কার্যক্রম খুব একটি প্রভাব ফেলতে পারেনি। তাদের কর্মকান্ড এখন সভা আর সমাবেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণেই জেলায় যা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যা রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি ও অন্যান্য সংস্থা সংগঠন এগিয়ে আসবেন এ দাবী জেলার সুশীল সমাজের।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন